জর্ডানে উদযাপিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন এবং শেখ রাসেল দিবস।
জর্ডানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদায় ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী সভা ও শিশু-কিশোরদের মধ্যে ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
এ সময় শেখ রাসেলের চেতনা জর্ডানস্থ বাংলাদেশি নব প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস আম্মান এক ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এ প্রতিযোগিতায় ১৮ বছরের কম বয়সী প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও জর্ডানের কিশোর-কিশোরীরা অংশ গ্রহণ করেন।
খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের শেখ রাসেলের সংক্ষিপ্ত জীবন ও চেতনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই ছিল এই টুর্নামেন্টের উদ্দেশ্য। দিবসের প্রতুষ্যে এই উপলক্ষে দূতাবাসে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও দূতাবাসে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শেখ রাসেল স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এই উপলক্ষে শেখ রাসেলের জীবনের ওপর একটি ছোট ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অন্যদিকে উৎসবমুখর পরিবেশে ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন উদযাপনের লক্ষে সজ্জিত দূতাবাসের চত্বরে এ সময় জর্ডানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ দেশটির স্থানীয় নাগরিক এবং জর্ডানে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় শুরুতে জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সব সদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে করোনা মহামারির কারণে বৈশ্বিক পরবর্তী পরিস্থিতিতেও জর্ডানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সব সন্মানিত অতিথি ও দর্শকবৃন্দকে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবরে ঢাকায় ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনের জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু তার প্রিয় লেখক খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে পরিবারের নতুন সদস্যর নাম রাখেন রাসেল। এই নামকরণে মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শৈশব থেকেই দুরন্ত প্রাণবন্ত রাসেল ছিলেন পরিবারের সবার অতি আদরের। কিন্তু মাত্র দেড় বছর বয়স থেকেই প্রিয় পিতার সঙ্গে তার সাক্ষাতের একমাত্র স্থান হয়ে ওঠে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট। তবে তার সাত বছর বয়সে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি নিজেই বন্দি হয়ে যান।”
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “শেখ রাসেল ভুবন ছিল তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বড় বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং ভাই শেখ কামাল ও জামালকে ঘিরে। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট কালরাতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়। তখন রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।”
এছাড়া অনুষ্ঠান শেষে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।