মাদক বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরাে টলারেন্স ঘােষণা করেছেন। এর বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে যেমন বলেছিলেন ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে, ঠিক তেমনই মাদকের বিরুদ্ধেও ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়ােজনে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার আওতায় আনার লক্ষ্যে সাঙ্গু মােটেল সৈকতের ব্যাজুয়েট হলে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, “২০৪১ সালে দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মাদকের অপব্যবহার সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।”
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালযয়ের সচিব মাে. মােকাব্বির হােসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মাে. আশরাফ উদ্দিন।
এছাড়া কর্মশালায় ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ), চট্টগ্রাম রিজিয়নের বিজিবি, ডেপুটি রিজিয়ন কমান্ডার, সিএমপির কমিশনার ও উপকমিশনারগণ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, র্যাব ও কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভাগীয় কারা উপমহাপরিদর্শক, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার বিভাগ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগ ও প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ ১৮০ জনের বেশি বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাে. আব্দুস সবুর মন্ডল।
বিভাগীয় কমিশনার মাে. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘‘মাদকের সরবরাহ ও চাহিদা কমানোর জন্য আয়ােজিত এই কর্মশালার মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তােলা সম্ভব হবে। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজকে সঙ্গে নিয়ে একযােগে এই যুদ্ধে নামতে হবে। বর্তমান সরকার মাদকাসক্তমুক্ত বাংলাদেশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে মাদক ব্যবসায়ীরা নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করে নতুন ধরনের মাদক পাচার ও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তরুণদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।’’
মাে. আশরাফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘‘মাদকের এই আগ্রাসন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করছে, যা দেশের উন্নয়নের অন্তরায়। যুবসমাজ তথা জাতিকে মাদকের এই ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষার লক্ষ্যে মাদকবিরােধী সর্বাত্মক সামাজিক সচেতনতা ও সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমন্বয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা এবং মাদকাসক্তদের বিদ্যমান সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থায় সেবা প্রদান জরুরি। তারই আলােকে মাদক নির্মূলে সমন্বিত খসড়া কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নের জন্য সবার সম্মলিত প্রয়াস প্রয়োজন।’’
এছাড়া কর্মশালায় জানানো হয়, কর্মপরিকল্পনার আলােকে ওয়ার্ড, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা/পৌরসভা, জেলা, বিভাগে সারা বছরব্যাপী মাদকবিরােধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলমান থাকবে।