গত ২০ বছর ধরে বৈবাহিক সূত্রে ঢাকায় বসবাস করছেন ইউক্রেনের নাগরিক আকসানা লাপিকাওয়াকাবির। তবে তার আত্মীয়-পরিজন সবাই বসবাস করেন ইউক্রেনে। দেশটিতে রাশিয়ার হামলার পর স্বজনদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন আকসানা।
এ সময় ভাঙা ভাঙা বাংলায় আকসানা বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। যত দ্রুত সম্ভব এই যুদ্ধ বন্ধ হোক, সেটাই চাই।”
বুধবার (২ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘নো টু ওয়ার, পিস ইন ইউক্রেন’ শীর্ষক ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
আকসানা লাপিকাওয়াকাবির বলেন, “ইউক্রেনে আমার মা, ছোট বোন ও ছোট বোনের সন্তান থাকে। এখন আমার মা ও বোনের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা বলছি। তবে তারা অনেক কষ্টের মধ্যে আছেন। আমার মা বৃদ্ধ, তার বয়স ৭২ বছর। তিনি বাসা থেকে বের হতে ভয় পান। সুপারমার্কেটে কেনা-কাটা করতে যেতে পারেন না। খাওয়ার ব্যবস্থা কম হচ্ছে, অভাবে আছে।”
আকসানা আরও বলেন, “ইউক্রেনে যা হচ্ছে, কোনো সুস্থ মানুষ এটা মেনে নিতে পারবে না। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমার নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা চাই। যে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় যুদ্ধ ছাড়াই।”
এ সময় যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশে বসবাস করা ইউক্রেনের অন্যান্য নাগরিকরা বলেন, “যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আমরা ইউক্রেনে ফিরতে পারছি না। ইউক্রেনে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যরা বিপদে আছেন।”
এছাড়া কাউকে কাউকে লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে বলেও জানান তারা।
মানববন্ধনে সাইফুল ইসলাম নামে ইউক্রেনপ্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, “গত ২৪ বছর ধরে ইউক্রেনে থাকি। আমি ইউক্রেনের নাগরিকও। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর আমি বাংলাদেশে বেড়াতে আসি। আজ (২ মার্চ) আমার ইউক্রেনে ফেরার ফ্লাইট ছিল। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে যেতে পারিনি।”
অপর এক ইউক্রেন প্রবাসী গাউছুল ইসলাম শাহেদ বলেন, “আমি সেখানে ব্যবসা করি। গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসি। আগামী ১০ মার্চ আমার ইউক্রেনে ফেরার কথা, টিকিটও কাটা আছে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে যেতে পারছি না। আমার স্ত্রী ও মেয়ে ইউক্রেনেই আছে। আমি আমার পরিবার নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারা খুব ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। বাসা থেকে বের হতে পারছে না। ইউক্রেনের রাজধানীতে রাস্তাঘাটে বোমা বর্ষণ হচ্ছে।”
গাউছুল ইসলাম আরও বলেন, “আমরা কোনও যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে তারা যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।”