প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিদেশি নাগরিকসহ সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ৭ জন বিদেশি এবং ২ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন নাইজেরিয়ার উডেজে ওবিন্না রুবেন (৪২), ইফুনানইয়া ভিভিয়ান নাউইকে (৩১), সানডে সেডারেক ইজিম (৩২), চিনেডু মোজেজ নাজি (৩৬), কলিমস ইফেসিনেছি তালিকে (৩০), সিডিম্মা ইবেলি আইলোফোর (২৬), দক্ষিণ আফ্রিকার এনটমবিখোনা গেবুজা (৩৬), বাংলাদেশি মো. নাহিদুল ইসলাম ও সোনিয়া আক্তার।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক এসব তথ্য জানান।
মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করে উপহার পাঠানোর লোভ দেখিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে গতকাল (১১ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু করে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮টি পাসপোর্ট, ৩১টি মোবাইল, ৩টি ল্যাপটপ, ১টি চেক বই, ৩টি পেনড্রাইভ এবং নগদ ৯৫ হাজার ৮১৫ টাকা জব্দ করা হয়।
মোজাম্মেল হক বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে তারা অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক-মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমোর মাধ্যমে নিজেদের উন্নত দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিত। পরে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির পর এক পর্যায়ে দামি উপহার বাংলাদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার জাল বিছানো হতো।”
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “বাংলাদেশি নাগরিক নাহিদুল এইচএসসি পাস করে প্রথমে একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করতেন। এরপর রেস্টুরেন্ট এবং কল সেন্টারেও কাজ করেন। ২০১৭ সালে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে ডিপ্লোমা করে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় যান এবং ২০২১ সালে দেশে ফিরে আসেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি আসামি সোনিয়া আক্তারের স্বামী।”
২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সোনিয়া একটি এম্বাসিতে ২৫ হাজার টাকা বেতনে চুক্তিতে চাকরি করতেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।