• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ছুটির দিনেও ঘোরে না চাকা


মো. মির হোসেন সরকার
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
ছুটির দিনেও ঘোরে না চাকা

সাধারণত ছুটির দিনে ঢাকা শহরে যানজট কম থাকে। স্বস্তিতে চলাফেরা করে মানুষ। তবে আজ দেখা গেল ভিন্নচিত্র। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দুপুর থেকেই তীব্র জট। কোথাও কোথাও ধীর গতিতে ঘুরছে গাড়ির চাকা। কোথাও দাঁড়িয়ে। এতে ছুটির দিনে জরুরি কাজে বের হয়ে ভোগান্তিতে সর্বসাধারণ। 

এদিকে তীব্র যানজটের কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং বাইক শেয়ারিংয়ে বাড়তি ভাড়া চাচ্ছেন চালকরা। তাদের দাবি, এক ট্রিপেই তাদের দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় নষ্ট হচ্ছে। এতে ট্রিপের সংখ্যা কমে গেছে।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরের পর সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, গুলিস্তান, শাহবাগ, বাংলামটর, ধানমন্ডি ও আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যাটজট। সিগনালগুলোতে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘ গাড়ির সারি। এক সিগনালে তিনবারও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে গাড়িগুলোকে। এক সিগন্যাল পার হতেই ৪০ মিনিট লেগে যাচ্ছে।

ছোট-বড় যানবাহনে সড়কে মোড়ে মোড়ে জট লেগেছে। যার প্রভাব পড়েছে নগরীর ছোট ছোট সড়কে। যানজটে চলাচলের জন্য রিকশা ভরসা হলেও গলিতে হেঁটে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই বললেই চলে।

ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা জানান, সকালে প্রধান সড়কগুলো যানজট কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে যানজট বেশি লাগে। নির্বিঘ্নে যেন সাধারণ মানুষ বাসায় পৌঁছতে পারে সেজন্য সর্বদায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ট্রাফিক পুলিশের সদস্য সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “রমজানে বরাবরই ইফতারে ঘণ্টা ২ আগে থেকেই সড়কগুলো বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠে। তবে সকালে তেমন যানজট ছিল না। দুপুরের পর থেকে কিছুটা যানজট বাড়তে দেখা যায়। আমরা যানজট নিরসনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় পরিবহনগুলো যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করে। এছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেশি হলে সড়কে যানজট বেড়ে যায়।”

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসাদগেট আসতে ৫ মিনিটের রাস্তা ১ ঘণ্টা সময় লাগে রহমত উল্লাহ’র। সময় বাঁচানোর জন্য প্রজাপতি বাসে উঠলেও আসাদগেটের এক সিগন্যালেই ৪০ মিনিট উধাও।

ক্ষোভ প্রকাশ করে রহমত উল্লাহ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “শনিবার ঢাকা শহর ফাঁকা থাকার কথা থাকলেও সেই ফাঁকা সড়ক নেই। সড়কে এত পরিমাণ গাড়ি নেমেছে যে যানজটে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া কষ্টকর। এরপর তো রমজানে মাসে যে পরিমাণ তীব্র গরম, বলা খুবই কষ্ট যানজট নিরসনে কোনো পদক্ষেপেই কাজ হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার যানজট নিরসনে বড় বড় মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছেন। এত বড় বড় মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের আমরা যানজটমক্ত ঢাকা পাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু কই সেগুলোর প্রভাব সড়কে? আগের মতোই গাড়িগুলো সড়কে আছে। যানজট লেগেই থাকছে সড়কে। যানজট থেকে পরিত্রাণের নানা উপায় থাকলেও কোনো কাজে আসছে না।”

সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার সরকারি ছুটি এবং নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও আসন্ন ঈদুল ফিতরের জন্য মার্কেট খোলা রাখা হয়েছে। ফলে নিউমার্কেটে সকাল থেকেই কেনাকাটা করতে বিপুল পরিমাণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়। এই ভিড় মার্কেট থেকে ফুটপাত হয়ে মূল সড়ক পর্যন্ত পৌঁছেছে। ফলে তৈরি হয়েছে যানবাহনের ধীরগতি এবং যানজট।

ভিআইপি ২৭ পরিবহনের চালকের সহকারী রজ্জব মিয়া সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “শুধুমাত্র সায়েন্সল্যাব পার হতেই প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগছে। এখন আবার নিউমার্কেট এলাকায় যানজট। অনেক মানুষ। গাড়ি চালানোর জায়গাই নেই৷ সকালে আপ ট্রিপে খুবই ফাঁকা রাস্তা পেয়েছি। এখন ডাউন ট্রিপে স্ট্যান্ডে যেতেই অনেক সময় লাগছে। মানুষ-দোকানপাট ফুটপাত ছেড়ে রাস্তায় চলে এসেছে। আর মূল সড়কে অনেক রিকশা। যার জন্য গাড়ির যেতে পারছে না।”

Link copied!