বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরের কয়েকটি সহিংস ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে সংস্থাটি।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো এসব কথা জানিয়েছেন।
গত ৭ জানুয়ারির ভোটে ২২২টি আসনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পথে রয়েছে আওয়ামী লীগ। সংসদে গত দুইবারের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬২টি আসনে জিতে এবার চমক দেখিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এর বাইরে আরও তিনটি দল পেয়েছে একটি করে আসন।
এই নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের একাংশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও ভোট সুষ্ঠু হয়নি বলে বিবৃতিতে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন নিয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়াকে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং শেখ হাসিনা সেখানে বিজয় পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। যদিও এই নির্বাচন এমন এক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে হাজার হাজার মানুষ এবং বিরোধী নেতাকর্মীকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জাতিসংঘ কি বিশ্বাস করে, এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে?”
জবাবে মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, “আমরা সেখানকার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সেখানে যা ঘটছে, তার দিকে মহাসচিবেরও নজর আছে। বিরোধী দল যে ভোট বয়কট করেছে, তা তিনি অবগত আছেন…আমি বলতে চাই, ভিন্নমত ও সমালোচনাকে দমন এবং বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তারের অভিযোগের বিষয়ে।”
ফ্লোরেন্সিয়া বলেন, “তিনি (মহাসচিব) স্পষ্টতই ভোটের আগে-পরের সহিংস ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং তিনি সহিংসতা পরিহার এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গণতন্ত্র সুসংহত ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য এটি জরুরি।”
২৮টি দল অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কাছ থেকে দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার দুই শতাধিক পর্যবেক্ষক।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা কাছ থেকে এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং তারা অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের নতুন সরকার আগামীতে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায়। বাংলাদেশের নতুন সরকারের বিষয়ে আপনার কিছু বলার আছে?
মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া বলেন, “আমরা যেটা চাইছি সেখানে সরকার যা করছে…সেটা আর চলবে না। কিন্তু সেখানে তাদের একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরি। সব ধরনের সহিংসতা পরিহার এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।”



































