সুনামি কী, কেন এটি ভয়ংকর


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ১১:০৩ এএম
সুনামি কী, কেন এটি ভয়ংকর
ছবি : সংগৃহীত

সুনামির আরেক নাম নীরব ঘাতক। উত্পত্তি নীরবে, আসেও চুপিচুপি; কিন্তু ধ্বংস করে যায় সরবে।

রাশিয়ার উপকূলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বুধবার (৩০ জুলাই)। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৮। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর রাশিয়ার কুড়িল দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হেনেছে সুনামি।


এ অবস্থায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রশান্ত মহাসাগরে বুধবার ভোরে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কুড়িল দ্বীপপুঞ্জে সুনামি আঘাত হেনেছে। এর জেরে উপকূলীয় সেভেরো-কুরিলস্ক শহর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
২০০৪ সালে ঘটে যাওয়া ইন্ডিয়ান সুনামি দিয়ে এই শতাব্দীতে সুনামির সঙ্গে মানুষের পরিচয়। ৯ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প হয়েছিল তার আগে ভারত মহাসাগরের কোথাও, আর তাতে তৈরি হওয়া সুনামির শক্তি ছিল ২৫ হাজার অ্যাটম বোমা বিস্ফোরণের সমান শক্তি। তার আগেও সুনামি হয়েছে কিংবা হতো; কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে যাওয়া সুনামির তীব্রতায় আড়াই লাখের চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু সুনামিকে নতুন করে স্মৃতিতে তুলে আনে।


ইংরেজিতে বলে Tsunami। জাপানি শব্দ থেকে এই শব্দের উত্পত্তি। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সুনামি হয় জাপানে। পৃথিবীর ৮০ শতাংশ সুনামি হয় প্রশান্তমহাসাগরে। আড়াই হাজার বছর আগে প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসে Thucydides মেডিটেরিনিয়ান সাগরে সুনামির কথা উল্লেখ করেছিলেন।

ভূমিকম্প থেকে অগ্ন্যুত্পাত, সাইক্লোন থেকে টর্নেডো, প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো মানব ইতিহাসে যুগে যুগে ছিল। বিশ শতকে এসে মানুষ ধীরে ধীরে বোঝার চেষ্টা করছে এসব দুর্যোগকে। এদের মধ্যে সুনামি অন্যতম। এক একটি সুনামির দৈর্ঘ্য হতে পারে ৫০০ মাইল, উচ্চতায় হতে পারে ১০০ ফিট। একটা সুনামির বেগ হতে পারে সুপারসনিক জেটের চেয়েও দ্রুত। সময়ের ব্যাপ্তিতে কয়েক মিনিট থেকে ঘণ্টাখানেক চলতে পারে সুনামির তাণ্ডব।


কিন্তু কী করে সুনামি হয়, কেন হয়, কীভাবে হয়, কখন হয়, বিষয়গুলো পরিষ্কার করতে শুরুতে সুনামি কী—এটা দিয়েই শুরু করা যাক।

সমুদ্রের বিশাল জলরাশির একটা অংশ হঠাত্ ফুলে ফেঁপে অনেকগুলো বড় বড় ঢেউয়ের সিরিজ হয়ে উঠলে তাকে সুনামি বলে। সুনামি মানেই পাহাড়সম উচ্চতার বড় বড় ঢেউ, কেউ কেউ বলে ট্রেন অব ওয়েব। যে কারণে অনেকে সুনামিকে tidal wave বলে। ঢেউয়ের প্রবাহ। কেউ কেউ সুনামিকে বলে Killer wave; কিন্তু বিজ্ঞানীদের মতে tidal শব্দটি ভুল। কেন ভুল তার উত্তরটি রয়েছে—ঢেউ যে কারণে হয় সুনামি সে কারণে হয় না। সুনামি হয় অন্য কারণে।

সুনামি কেমন করে হয় তার বর্ণনা দেওয়ার আগে জেনে নিই ঢেউ কেমন করে হয়। সমুদ্রের ঢেউ শুধু বাতাসের কারণে হয় না। অনেকে ভাবে ঢেউয়ের পানি দুলে ওঠে কেবল বাতাসের কারণে। ঢেউ হয় চাঁদ এবং সূর্যের গ্রাভিটির কারণে। চাঁদের এবং সূর্যের গ্রাভিটি পৃথিবী পৃষ্ঠে থাকা জলকে তার দিকে টানে, আবার পৃথিবীর গ্রাভিটি জলকে তার দিকে টেনে ধরে রাখে। তৈরি হয় জলের প্রবাহ বা তরঙ্গ। এটাই ঢেউ। সে ঢেউগুলোর একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে; কিন্তু সুনামির ঢেউ ভিন্ন রকম।

সুনামি দুইভাবে হয় বা হতে পারে। প্রাকৃতিক কারণে অথবা কৃত্রিম সৃষ্ট কারণে।

সুনামি হয় সমুদ্রের তলদেশে কোনো ভূমিকম্প হলে, কোনো অগ্ন্যুত্পাত হলে, সমুদ্রের তলদেশে থাকা বড় কোনো গ্লেসিয়ার হঠাত্ ধসে পড়লে অথবা কোনো বিশাল মেটেরয়েড ভূপৃষ্ঠে এসে সমুদ্রের কোনো অংশকে আঘাত করলে।

কৃত্রিম সৃষ্ট উপায়ের মধ্যে সমুদ্রের তলদেশে কোনো বড় বিস্ফোরণ ঘটালে, কোনো পরীক্ষামূলক বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে সুনামি হতে পারে।

তারমানে সুনামির শুরুটা হয় সমুদ্রের ভূমিতে, ওপরে জলের মধ্যে নয়।

জাপানি ভাষায় সুনামিকে বলে কানজি। এর অর্থ পোতাশ্রয়ের ঢেউ। সুনামির ঢেউ ১০০ ফিট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। সুনামির ঢেউ ঘণ্টায় ৫০০ মাইল বেগে ছুটতে পারে। ঢেউয়ের ব্যাপ্তি এবং দ্রুততা, শুধু এই দুটো দিয়েই বোঝা যায় শান্তশিষ্ট ঢেউ যখন দৈত্য হয়ে ওঠে, কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে।

কেমন করে সুনামি হয়—পুরো ব্যাপারটিকে বিজ্ঞানীরা পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথমে : সক্রিয়করণ, দ্বিতীয় : প্রস্তুতি, তৃতীয় : তৈরি হওয়া চতুর্থ : আত্মপ্রকাশ এবং পঞ্চম : পরিণতি।

সুনামির শুরু হয় কূল থেকে অনেক দূরে সমুদ্রের তলদেশে কোথাও। সি ফ্লোরে ভূমিকম্পজাতীয় কিছু হলে তলদেশের ওপরে থাকা মাত্র কয়েক মিটারের বিশাল জলরাশি একসঙ্গে হঠাত্ করে এলোমেলো হয়ে যায়। এই এলোমেলো জলরাশি তখনো ওপরের জলরাশি ঢেউয়ের ওপর প্রভাব ফেলে না। তলদেশের এই বিশাল জলরাশি ওপরের জলের চেয়ে দ্রুত প্রবাহিত হয়। সমুদ্রের ওপরের ঢেউগুলো যেখানে বাতাসের তোড়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে যায়, সেখানে সমুদ্রের গভীর তলদেশে এই জলের সে কত ঘণ্টায় ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায়। সমুদ্রের উপরিভাগে এক একটি ঢেউয়ের ব্যাপ্তি যেখানে ১০০ মিটার পর্যন্ত হয় মাত্র, সেখানে সমুদ্রের তলদেশে এক একটি এমন ঢেউয়ের ব্যাপ্তি ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আস্তে আস্তে এই বিশাল ঢেউ ওপরের জলরাশিকে প্রভাবিত করে কূলের দিকে ছুটতে থাকে। ওপরের ঢেউগুলো নিচের বিশাল ঢেউয়ের তরঙ্গে ফুলে ফেঁপে ১০ ফুট থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত হয়ে ওঠে এবং কূলের দিকে দ্রুত ছুটতে থাকে। এক একটি ঢেউ এমন উচ্চতায় পাঁচ থেকে ছয় মিনিট থাকে। সামনে ছোট ঢেউ কূলে এসে আছড়ে পড়লে পেছনের ঢেউ আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সুনামির ঢেউ প্রথমে এমন করে একবার বিশাল জলরাশি নিয়ে আঘাত করে সামনে যা পায়, ভেঙেচুরে দেয়। দ্বিতীয় ধাক্কাতে সেই ভাঙা অংশগুলোকে সমুদ্রে টেনে নেয়।

এমন করে হঠাত্ দৈত্যের মতো এসে এক কিলোমিটারের মতো কূলের কাছের যা কিছু আছে, ভেঙে গুঁড়িয়ে আবার সমুদ্রে ফিরে যায়।

সুনামি হলে সাঁতার কাটার চিন্তা করবেন না। হাতের কাছে শক্ত কোনো কিছু ধরে থাকবেন। যদি সেটাও সম্ভব না হয়, কিছু একটা ধরে ঢেউয়ের সঙ্গে ভাসতে চেষ্টা করবেন, তবুও ভুল করে সাঁতরাতে চেষ্টা করবেন না।

ভয়ংকর যত সুনামির কথা  

চিলির ভূমিকম্প ১৯৬০: ১৯৬০ সালের মে মাসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে আঘাত হানে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটির মাত্রার ছিল ৯ দশমিক ৫। এখন পর্যন্ত এটিকেই বিশ্বের ভয়াবহ ভূমিকম্প বলা হয়। এর থেকে সৃষ্টি হয় সুনামির। চিলির ভূমিকম্প ১৯৬০উপকূলে সুনামির আঘাতে চিলিতে প্রাণ হারান পাঁচ হাজার সাতশ’র বেশি মানুষ। হাওয়াইয়ে প্রাণ হারান ৬১ জন। দুর্যোগটি জাপান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বলা হয়, চিলির এ সুনামিটির উচ্চতা ছিল ১৬ ফুট। 

মরো উপসাগর: ১৯৭৬ সালের ১১ আগস্ট মধ্যরাত। ফিলিপাইনের মিনদানাও ও সুলু দ্বীপে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। এরপর সৃষ্টি হয় সুনামির। এর উচ্চতা ছিল পাঁচ মিটার। এর উচ্চতা ছিল পাঁচ মিটারএ সুনামিতে প্রাণ হারান পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। ফিলিপাইনের ইতিহাসে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর মধ্যে এটি একটি।

পাপুয়া নিউগিনি: ১৯৯৮ সালের জুলাইয়ের ১৭ তারিখ। এদিন পাপুয়া নিউগিনিতে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। দুটির মাত্রাই ছিল ৭। এরপর সৃষ্টি হয় সুনামির। এ সুনামিটি উত্তরাঞ্চলের উপকূলের ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ভেসে যায় সাতটি গ্রাম। সরকারি তথ্যানুযায়ী, এ সুনামির ফলে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। তবে স্থানীয়দের মতে, এতে প্রাণ হারিয়েছেন ছয় হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়াও ঘরহারা হন ১২ হাজারের বেশি।

আচেহ প্রদেশে ‘মেগাথ্রাস্ট’ ভূমিকম্প: ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ। এদিন ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলের দ্বীপ সুমাত্রার আচেহতে আঘাত হানে ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প মেগাথ্রাস্ট। এর পরপরই সৃষ্টি হয় ভয়াবহ সুনামি। যা সোমালিয়ার উপকূলীয় অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আচেহতে আঘাত হানে ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প মেগাথ্রাস্টসুনামিটি ভারত মহাসাগরের অনেক দেশেই আঘাত হানে। কেবল ইন্দোনেশিয়াতেই ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়। নিহতের সংখ্যা সবথেকে বেশি ছিল আচেহ প্রদেশে। এ সুনামিতে বিভিন্ন দেশের আরও ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়। সবমিলিয়ে আনুমানিক মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। এটাকে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর একটি হিসেবে ধরা হয়। 

জাপানের সুনামি: ২০১১ সালের মার্চের ১১ তারিখে ভয়াবহ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে জাপানে। ৯ মাত্রার ভয়াবহ এ ভূমিকম্প থেকে সৃষ্টি হয় সুনামির। জাপানের এ সুনামিতে ১৯ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারান। অনেকেই থাকেন নিখোঁজ। বলা হয়, সুনামিটির ভয়াবহ উচ্চতার পানির গতি ছিল একটি জেট প্লেনের গতির সমান। ৯ মাত্রার ভয়াবহ এ ভূমিকম্প থেকে সৃষ্টি হয় সুনামিরএ সুনামিতেই ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও প্লাবিত হয়। ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর এটিই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। 

সুনামির আঘাত থেকে রক্ষা পেতে কী করতে পারে মানুষ? 

এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে : সুনামির ক্ষতি পুরোপুরি ঠেকানো অসম্ভব। তবে তা সাধ্যমতো কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূমিকম্প প্রকৌশল বিভাগের রিডার ড. তিজিয়ানা রোসেত্তো বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও প্রাণহানির সংখ্যা কমিয়ে আনতে দুর্যোগ মোকাবিলা-সংক্রান্ত পরিকল্পনাকারীদের অনেক কিছুই করার রয়েছে। ড. রোসেত্তো বলেন, এ জন্য অনেক পূর্বসতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। যেমন, ভবনের নকশা এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে তা সমুদ্রের স্রোতের ধাক্কা সহ্য করতে পারে। এ ছাড়া দক্ষ ও কার্যকর আগাম-সতর্কতা পদ্ধতি, জনসচেতনতা কর্মসূচি ও মানুষকে সরিয়ে নেয়ার কর্মকৌশল গড়ে তুলতে হবে। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আগাম-সতর্কতামূলক ব্যবস্থা কতটা সহায়ক হবে, তা নির্ভর করবে সুনামি কত দূরে আঘাত হানতে যাচ্ছে, তার ওপর। খুব কাছেই আঘাত হানলে এই সতর্কতা-ব্যবস্থা খুব কার্যকর হবে না। কারণ, এতে মানুষকে সরিয়ে নেয়া ও অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি সময় পাওয়া যাবে না। বিশেষজ্ঞ রোসেত্তো জানালেন, সুনামির মতো নিয়ন্ত্রণ অযোগ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পদক্ষেপ হলো যত দ্রুত সম্ভব মানুষের সাগর উপকূল থেকে দূরে ও উঁচু জায়গায় সরে যাওয়া নিশ্চিত করা। অত্যাধুনিক যে আন্তর্জাতিক সুনামি-সতর্কতা ব্যবস্থা চালু আছে, তার সেন্সরগুলো সুনামির আগাম সংকেত ধরতে পারে। সেখান থেকে তথ্য পেয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো দ্রুত জনগণকে সতর্ক করতে রেডিও-টেলিভিশন এবং লাউডস্পিকার নেটওয়ার্কের সাহায্য নিতে পারে। তবে ড. রোসেত্তো বলেন, যদি ভূমিকম্প উপকূলের খুব কাছাকাছি আঘাত হানে (এবার জাপানে যা হয়েছে), তাহলে সুনামির ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করার জন্য কর্তৃপক্ষ হয়তো মাত্র পাঁচ থেকে ১০ মিনিট সময় পাবে। সুনামির সময় কী করতে হবে, তা মানুষকে আগে থেকেই জানাতে হবে। আর এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই ব্যাপক প্রচারণা। জাপানের মতো সুনামির ঝুঁকির মুখে থাকা উন্নত দেশগুলোতে এর খুব ভালো ব্যবস্থাও রয়েছে। বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে স্কুলের পড়াশোনায়। এ জন্য প্রচারণা চালানো হয় টেলিভিশন ও রেডিওতে। বিতরণ করা হয় প্রচারপত্র। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের রাস্তাগুলোতে জরুরি পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কম সময়ে উঁচু ও নিরাপদ জায়গায় পৌঁছানোর পথনির্দেশনা দেওয়া আছে। সময় অল্প হলে কোনো শহর থেকে সব লোকজনকে হয়তো সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে শহরবাসীকে ভবনের উঁচুতলা ও বহুতল কার পার্কে আশ্রয় নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।

Link copied!