• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

‘দায়সারা তদন্তের কারণে অপরাধীরা সাজা পায় না’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৪, ০৪:১১ পিএম
‘দায়সারা তদন্তের কারণে অপরাধীরা সাজা পায় না’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

দায়সারা তদন্তের কারণে অপরাধীরা সাজা পায় না বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেছেন, “একটি দুর্ঘটনা ঘটলে, পরে দায়সারা তদন্ত হয়। ফলে কে অপরাধী সে দায়ভার নির্ধারণ হয় না। যার কারণে তারা পার পেয়ে যান। এতে বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে মানুষের মুখের কথায় একজনের ওপর আরেকজনের দায়ভার চাপানোর অপচেষ্টা না করে আইনের আওতায় যেভাবে দায়ভার নির্ধারণ করা হয়, সেটি করতে হবে।”

বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিলে ‘সাউথ পয়েন্ট নগর ব্যায়ামাগার’ উদ্বোধন শেষে অগ্নিনিরাপত্তা ও চলমান অভিযান প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা উল্লেখ করে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “বেইলি রোডের দুর্ঘটনায় আমরা অত্যন্ত শোকাহত। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্নভাবে ঢালাওভাবে দায়ভার এবং দোষারোপ করার একটি অপউদ্যোগ চলছে। বিভিন্ন মহল এটি করছে। আসলে দায়ভার বা দায়িত্ব এটা নির্ণয় করবে আইন। এখানে কেউ ঢালাওভাবে কিছু বললে আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সেটাকে প্রভাবিত করবে। সুতরাং আমি সবাইকে অনুরোধ করব, তথ্য-উপাত্ত ছাড়া সঠিকভাবে না জেনে ঢালাওভাবে দোষারোপ বা দায়ভার দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।”

মেয়র বলেন, “সারা বিশ্বে আইনগতভাবেই এগুলো নির্ধারিত। আইন বলে, যে কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তার জন্য যে সংস্থা দায়িত্বশীল তাদেরই আইনের আওতায় আনা হবে। যেহেতু বাংলাদেশ কমনওয়েলথভুক্ত দেশ স্বাভাবিকভাবেই আমরা আমাদের আইনগুলো ব্রিটিশ সরকারের আইনটাই এখন পর্যন্ত ব্যবহার করছি। আমরা যদি বেইলি রোডের দুর্ঘটনা দেখি তাহলে দেখব যে, সেখানকার সিঁড়িটি প্রশস্ত ছিল না। একটি ৯-১০ তলা ভবন নির্মাণ করতে হলে বেশ কিছু ইমারত বিধিমালা মানতে হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বিধিমালা প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম দায়ভার কার? এখানে প্রথম দায়ভার হচ্ছে একজন স্থপতির। যিনি এই ভবনের নকশা তৈরি করেছেন। কারণ বাড়ির মালিক তার কাছে পেশার সেবা নিতে যাচ্ছেন।”

তাপস বলেন, “সারা বিশ্বের আইনে বলা আছে, যিনি পেশার সেবা দেবেন তাকে বিশেষভাবে যথাযথ আইনের নীতিমালাগুলো পরিপালন করতে হবে। ১০ তলা ভবনে কতটুকু প্রশস্ত সিঁড়ি থাকার কথা সেটি ওই পেশাদার স্থপতির জানার কথা। সেখানে কয়টি সিঁড়ি থাকবে সেটা ওই স্থপতিই ঠিক করে দেবেন। সেখানে ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী কী কী সুবিধা থাকতে হবে, কতটুকু জায়গা ছাড়তে হবে, সিঁড়ি কতটি হবে এবং কতটুকু প্রশস্ত হবে এই সবকিছুর দায় সেই স্থপতির ওপর বর্তায়। সে হিসেবে প্রথম দায়ভার হচ্ছে স্থপতির। দ্বিতীয় দায়ভার হচ্ছে যে এই নকশাটা অনুমোদন করছেন তার। তাকে দেখতে হবে নকশাটা সরকারের বিধিমালা অনুযায়ী হয়েছে কি না। এখানে যদি কোনো অবহেলা বা গাফিলতি থাকে তাহলে সেটি সেই কর্তৃপক্ষের দায়ভার হবে। এর পরের ধাপে আমরা দেখতে পাই, ভবন নির্মাণে কিছু ছাড়পত্র নিতে হয়। যেসব কর্তৃপক্ষ এসব ছাড়পত্র দিয়েছেন এর পরের দায় তাদের ওপর বর্তাবে।”

তাপস আরও বলেন, “এখানে তাদের অবহেলা বা গাফিলতি আছে কি না সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে আইন। আবার এখানে মালিক পক্ষের দায়ভারও রয়েছে। তাই ঢালাওভাবে কারও ওপর দায় না চাপিয়ে তদন্তে করা উচিত।”

Link copied!