কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির প্রভাব বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) স্পষ্টভাবে পড়েছে রাজধানীর সড়কে। সকালে ঢাকার সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা থাকলেও দুপুরের পর ধীরে ধীরে কিছুটা যানবাহন বাড়তে শুরু করে। তবুও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা ছিল কম, আর মেট্রোরেলেও যাত্রী কম দেখা গেছে।
গত কয়েকদিনের ধারাবাহিক বাসে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় শহরজুড়ে ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এতে অনেক নাগরিক জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। অফিস-আদালত খোলা থাকলেও রাস্তায় যাত্রী ছিল কম, ফলে গণপরিবহনে দেখা গেছে শূন্যতা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছিল একই চিত্র। বেশ কিছু স্কুল-কলেজে ক্লাস চললেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও অধিকাংশ বিভাগে ক্লাস হয়নি। পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ, সমাজকল্যাণ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, মৎস্যবিজ্ঞান ও এমআইএস বিভাগে ক্লাস স্থগিত করা হয়, আর নৃতত্ত্ব বিভাগে অনলাইন ক্লাস নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর প্রধান তিন টার্মিনাল—সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী—থেকে অল্পসংখ্যক বাস ছাড়লেও দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল প্রায় বন্ধ। অগ্নিসংযোগের আশঙ্কায় অনেক পরিবহন মালিক বাস রাস্তায় নামাননি। ফলে যারা আগে থেকে টিকিট কেটেছিলেন, তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলে জানান পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। দুপুরের পর কিছু বাস চলাচল শুরু হলেও ভোগান্তি কমেনি।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। অনেক এলাকায় তল্লাশি চলছে। ধানমন্ডি, গুলিস্তান, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে সকালে সন্দেহভাজন এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। দুপুরে একই এলাকা থেকে আরও এক যুবককেও আটক করা হয়। ধানমন্ডি জোনের এএসসি শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান জানান, আটক কিশোরের আচরণ সন্দেহজনক ছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, তাদের সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠনের যোগ থাকতে পারে।
দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ভবনের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায় এবং বাইরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। সকালে ভবনের সামনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল দেখা যায়। পরে শিবির কর্মীরা সেখানে অবস্থান নেয় এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী সন্দেহে একজনকে ধরে পুলিশে দেয়।






























