• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

নিষেধাজ্ঞা আর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, উজান ঠেলে এগিয়ে যাবে নৌকা : শেখ হাসিনা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩, ০৭:৩০ পিএম
নিষেধাজ্ঞা আর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, উজান ঠেলে এগিয়ে যাবে নৌকা : শেখ হাসিনা
আগারগাঁওয়ে পুরানো বাণিজ্য মেলা মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, “২০০১ থেকে ২০০৭ সময়কালে দেশ ছিল অন্ধকারে। এখন আর সেটা নেই। বাংলাদেশ আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি, সেটা একের পর এক পূরণ করে যাচ্ছি। কবি সুকান্তের ভাষায় বলেন- এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।” 

মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে চলেছে আওয়ামী লীগ। এমন মন্তব্য করেছেন দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “২৯টি বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কি দিয়েছে এদেশের মানুষকে। এদেশের মানুষের আকাশ কালো মেঘে ঢাকা ছিল তখন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়েছে।”

শনিবার (২সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর রাজধানীর পুরানো বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন আমরা করেছিলাম প্রথমবার সরকারে আসার পর থেকেই। আর বর্তমানে ক্ষমতায় থেকে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করে ওয়াদা রক্ষা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।”  
মূলত সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে চলেছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা বা নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় সাময়িক সমস্যায় পড়েছে দেশ।
আমার কাজ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার কাজ একটাই, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। দেশের মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সব ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি বলেন, “রাজধানীকে যানজট মুক্ত করতেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা হয়েছে। এটি ঢাকার যানজট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না।” তিনি আরও বলেন, রাজধানীর সঙ্গে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের একটি নতুন উপহার আজকে আপনাদের জন্য দিয়ে যাচ্ছি। যেটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক।:

উজান ঠেলে নৌকা এগিয়ে যাবে: 
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলন, ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা বা বিদেশিদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। তিনি বলেন, “নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলেই এগিয়েছে। উজান ঠেলেই এগিয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, অনেকে আন্দোলনের কথা বলে। আবার ভিসানীতি বা নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখায়। আমার স্পষ্ট কথা, দেশ আমাদের, দেশ আমরা স্বাধীন করেছি। এসব ভয় আমাদের দেখিয়ে লাভ নেই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকের বাংলাদেশের এত উন্নয়ন কেন হয়েছে? দেশে একটা গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা রয়েছে বলেই সেটা হয়েছে। অনেকে এখন গণতন্ত্র উদ্ধার করবেন বলেন। তারা কী গণতন্ত্র দিয়েছে, আমরা জানি। এখন আবার অনেকে আন্দোলনের কথা বলে। ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখায়। এসব ভয় আমাদের দেখিয়ে লাভ নেই। আজকে যারা আন্দোলনের নামে রোজই আমাদের ক্ষমতা থেকে ফেলে দিচ্ছে, আমি তাদের বলবো- মেঘ দেখে করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, নৌকা মার্কা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে। এই নৌকাই স্মার্ট বাংলাদেশ দেবে। আত্মবিশ্বাস রেখে জনগণের কল্যাণে কাজ করলে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব। এটা আমরা দেখেছি। তবে তার জন্য স্থিতিশীলতা দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আজকে একটা সাময়িক সমস্যা চলছে। আমাদের ওপর অর্থনৈতিক ধাক্কা এসেছে। এজন্য আমি বলেছি, দেশে কোনো অনাবাদি জমি থাকবে না। নিজের ফসল নিজে ফলাবো। নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করে খাবো। কারও কাছে হাত পাতবো না। জাতির পিতা বলতেন, ভিক্ষুকের জাতির উন্নতি হয় না।”

তিনি আরও বলেন, “পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশকে দাবায়ে রাখা যায় না। মেট্রোরেল, উড়াল সড়ক উদ্বোধন করলাম। এগুলো সবই জনগণের স্বার্থে। সারাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবনীয় উন্নতি করেছি। আমরা চাই, আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার এই স্বাধীন দেশের একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। তাদের ঘরবাড়ি করে দিচ্ছি। বেকারদের কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছি। সরকারি চাকুরেদের মত সবার জন্য সার্বজনীন পেনশন চালু করেছি। শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যতও যেন আলোকিত হয়, আমরা সে উদ্যোগই নিচ্ছি।

২০৪১ সালে হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ: 
আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এটা সম্ভব হয়েছে আমরা ক্ষমতায় আছি বলে, সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে বলে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। সরকারের ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশে উন্নয়ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন সম্ভব হয়েছে আমরা ক্ষমতায় আছি বলে, সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে বলে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন নিয়ে বাঁচতে পারে। আমরা বাংলাদেশকে সেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব। এ দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ থামাতে পারবে না ”

তিনি বলেন, “দেশের জনগণ যতদিন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে আছে, ততদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করে কেউ সরকারের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, দেশ আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ রুখতে পারবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এটা সম্ভব হয়েছে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে বলে। এই গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাআল্লাহ ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ।”

নতুন উপহার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: 
দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা উড়াল সড়ক উদ্বোধন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে আমি আপনাদের আরেকটি নতুন উপহার দিচ্ছি। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকা শহরে যানজট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এই উড়াল সড়ক। সময় বাঁচবে। মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের নান্দনিক ভিলেজ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।”

ঢাকা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা, যানজট নিরসনে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “এই এক্সপ্রেসওয়ে বিশেষ করে এয়ারপোর্ট, কুড়িল বিশ্বরোড, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, মগবাজার, কমলাপুর এলাকার যানজট নিরসন করবে। এর ফলে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে, কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না, মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ঢাকাবাসীর দীর্ঘদিনের যে একটি আকাঙ্ক্ষা, এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে তা পূরণ হবে। আমরা আজ যতদূর পর্যন্ত (সম্ভব) করলাম, পরবর্তী সময়ে বাকিটাও হয়ে যাবে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

Link copied!