ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, '৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অরাজকতা অব্যাহত আছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। মানুষ বলতে বাধ্য হচ্ছে আগে ভালো ছিলাম না, এখন আরও খারাপ আছি।'
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত আটটি দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এসময় তিনি বলেন, 'আমরা আট দলের বিজয় চাই না, আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, তাবেদারি নয়; স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যেতে চাই।'
৩৫ বছর বা তার নিচে যাদের বয়স অথবা যারা বিগত তিন সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি তাদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, 'এবার তোমাদের ভোট নিয়ে কেউ ছিনিমিনি করতে চাইলে আমরা তা হতে দেবো না। সেদিন আমারও যুবক হয়ে তোমাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করব।'
তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তোমাদের হাতে আমরা দেশটা তুলে দিতে চাই। সেজন্য নিজেদেরকে প্রস্তত করো। তোমরা চাকরি করবে না, চাকরি দেবে।'
শফিকুর রহমান বলেন, 'স্বাধীনতা পরবর্তী ৫৪ বছরে জনগণের লালিত স্বপ্ন অনেকাংশেই বাস্তবায়ন হয়নি। দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন হলেও এটা প্রকৃত উন্নয়ন নয়। দেশ ও জাতির মধ্যে ন্যায়বিচার ও সামাজিক সুশাসন আছে কি না সেটা বিবেচ্য।'
তিনি বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দুই ধারায় চলমান। এক ধারায় রয়েছে মাদরাসা শিক্ষা, অন্যধারায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা। মাদরাসায় খুন-খারাবি বা অস্ত্রবাজি হয় না, জ্ঞানের চর্চা হয়। পক্ষান্তরে ৫৪ বছরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানদের লাশ পড়েছে, মদ-গাঁজার আসর বসেছে, মেয়েদের ইজ্জত লুট হয়েছে এবং অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'সভ্য হতে হলে আমাদেরকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। কিছু দল ও ব্যক্তি দফায় দফায় দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান করে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে।'
জামায়াতের আমির বলেন, 'অনেক স্থানে আমাদের ব্যানার-পোস্টার- ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। তবে জনগণ এখন আর পোস্টার দেখে ভোটের সিদ্ধান্ত নেয় না। তারা আমাদেরকে ভালোবেসে বুকের মধ্যে স্থান দিয়েছে।'
আন্দোলনরত আট দলের ৫ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, 'ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে।'
প্রয়োজনে আরও একবার ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

































