• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিশুদের খেলনায় ডলারের প্রভাব


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৪, ০৯:৫৭ পিএম
শিশুদের খেলনায় ডলারের প্রভাব
শিশুদের খেলনা। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

ডলার সংকট, এলসি বন্ধসহ নানা কারণে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি। যার প্রভাব পড়ছে সর্বত্রই। খোলাবাজার থেকে বেশি দামে ডলার কিনে চাহিদা পূরণ করলেও আমদানি খরচ বাড়ায় মূল্য বাড়াতে কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। আবার আমদানি খরচ অনুযায়ী পণ্যের মূল্য বাড়লেও বিক্রিতে ভাটা পড়ছে। ফলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই অনেক ব্যবসায়ীর কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গুলশান-১-এর ডিএনসিসি মার্কেটে দেখা যায়, কিছুদিন আগেও যেখানে বিকেলে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে ক্রেতা সমাগম কম। যারা আসছেন পণ্যের দাম বেশি দেখে অনেকেই ঘুরে যাচ্ছেন। পণ্য কিনতে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কম থাকায় মূল্য বেশিকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, ডলারের প্রভাবে যেভাবে আমদানি খরচ বেড়েছে সেভাবে মূল্য বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না। ফলে ব্যবসায় মন্দা পরিস্থিতি। আমদানি খরচ অনুযায়ী পণ্যের মূল্য বাড়ালে বিক্রি কমছে। এ জন্য সীমিত মূল্য রেখে বিক্রি সমন্বয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও তাতে লাভের অংশ ছোট হয়ে আসছে, তবুও ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য তা খুবই জরুরি হয়ে পড়ছে।

জানতে চাইলে সবুজ নামের এক ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “খেলনা পণ্য সবই আমদানি করা এবং ডলারের সাথে সংযুক্ত। আমদানি করতে হলে ডলারের প্রয়োজন। যা এখন চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না। ব্যাংকের ওপর ডলারের জন্য ভরসা রাখা হলেও পর্যাপ্ত ডলার নেই। ফলে খোলাবাজারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে প্রায় সবাই। ডলারের দাম বাড়ায় খেলনা পণ্যের দাম বেড়েছে। বিগত ৭-৮ বছরের তুলনায় গত ২ বছরে পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে।”

সবুজ আরও বলেন, “প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর আমাদের সিজন থাকে। দুঃখের বিষয় হলো এই সিজনের সময়ই আমাদের বিক্রি কমেছে। ফলে লাভের পরিমাণও ছোট হয়ে আসছে।”

শিশুদের খেলনা। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ী সবুজ বলেন, “৪০-৪৫ শতাংশ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। বিপরীতে ৪০-৪৫ শতাংশ মূল্যও বাড়ানোর কথা। তবে আমরা সেই তুলনায় মূল্য বাড়াতে পারেনি। ফলে আমাদের বিক্রি বাড়ানোর জন্য লাভের অংশ কমিয়ে দিয়ে সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার যেন মধ্য থাকে খেলানা পণ্য সেই চেষ্টাই করছি।”

এদিকে শিশুদের খেলনা সামগ্রীর দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ মানুষ। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে যেখানে সংসার চালানোই কঠিন, সেখানে শিশুদের বিনোদনের অনুষঙ্গ ক্রয় করা খুবই কষ্টসাধ্য। দাম সহনীয় পর্যায়ে তখন কেবল খেলনা পণ্য ক্রয়ের চাহিদা বাড়বে বলে মনে করেছেন অনেক ক্রেতা।

কাউসার নামের এক ক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “কিছুদিন আগেও ভ্যাসপা নামের একটা বাইকের দাম ৭-৮ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু সেই একই বাইক এখন ব্যবসায়ীরা দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৯ হাজার টাকা। তাহলে একটি বাইকেই যদি এত বাড়ে অন্যগুলোতে কী হবে।”

কাউসার আরও বলেন, “ডকু পেইন্ট করা একটি বাইকের দাম গত বছর ছিল ১৮ হাজার টাকা। তবে এখন সেই বাইকের দাম ২৬ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী দাম বৃদ্ধির বিষয় যৌক্তিক। কারণ ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি খরচ বেড়েছে।”

যাদের সামর্থ্য আছে, কেবল তারাই খেলনা পণ্যে কিনতে পারছেন উল্লেখ করে কাউসার বলেন, “২২ হাজার টাকার খেলনা কেনার সামর্থ্য আমার আছে। তবে সেটি কি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে সম্ভব? উত্তর হবে ‘না’। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে সংসার চালানোই কঠিন, সেখানে শিশুদের বিনোদনের অনুষঙ্গ ক্রয় করা খুবই কষ্টসাধ্য সবার জন্য।”

Link copied!