• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইয়ের দাম ৪০ হাজার হলেও মিলবে ৩ হাজারে


বিজন কুমার
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ১০:০০ পিএম
বইয়ের দাম ৪০ হাজার হলেও মিলবে ৩ হাজারে

চিকিৎসা শাস্ত্রের একটি বইয়ের দাম ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু আপনি যদি চিকিৎসক হন, আর সেই বই যদি ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে কেমন হবে?

ভাবতে অবাক লাগলেও, রাজধানী ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেটে খুব কম দামেই পাওয়া যায় এসব বই। এখানে রয়েছে দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসাবিদদের পাশাপাশি বিদেশি চিকিৎসাবিদদের লেখা বইয়ের সমাহার।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) যাওয়া হয় শাহবাগ এলাকার আজিজ সুপার মার্কেটে। সরেজমিনে দেখা যায়, বইয়ের দোকানগুলো অধিকাংশই ফটোকপি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আর এসব দোকানগুলোতেই রয়েছে কম দামে বিক্রি হওয়া চিকিৎসা শাস্ত্রের এই বইগুলো। যা মূল বইয়ের অনুলিপি বা ফটোকপি করা। তবে দেখে বোঝার উপায় নেই।

ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে রয়েছে এডিএম আব্দুল, প্রফেসর জলিল স্যার, রাশেদা বেগম, ড. ডিসি পালের লেখা বই। আর বিদেশি লেখকদের মধ্যে রয়েছে, ডেভিড জেমস, ফ্লিপ জে. স্টেয়ার, কার্ল পি. উইনার, বার্নার্ড গনিকের লেখা বইগুলো।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে শুধুমাত্র বিদেশি চিকিৎসাবিদদের লেখা বইগুলোর অনুলিপি পাওয়া যায়। আর তাদের ক্রেতা অধিকাংশই ডাক্তার ও চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থী।

অপরদিকে, ডাক্তার ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশের চিকিৎসা শাস্ত্রের মান উন্নয়নে কম দামের এসব দোকান অনেকটা আশীর্বাদ স্বরূপ।

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাজকুমার রায়। কথা হয় তার সঙ্গে। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “আমি এই দোকানগুলো থেকে বই সংগ্রহ করেছি। চিকিৎসা বিজ্ঞান এমন এক অধ্যায়- যেখানে আপনাকে প্রতিদিন পড়তে হবে। আপনি চিকিৎসক হওয়ার পড়েও পড়া ছেড়ে দেওয়ার উপায় নেই। আমাদের যেমন দেশের চিকিৎসাবিদদের লেখা বইগুলো পড়তে হয়। ঠিক একই রকমভাবে বিদেশি লেখকদের বইগুলোও পড়তে হয়। কিন্তু বিদেশি লেখকদের বইগুলোর দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। ফলে নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কেনা সম্ভব নয়। তাই এই স্থান থেকে আজিজ সুপার মার্কেট চিকিৎসাশাস্ত্রের জন্য এক আশীর্বাদ।”

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে শিক্ষানবিশ ডা. মোর্শেদুল হক বলেন, “আজকে একটা বই কিনলাম, যে বই অরিজিনাল (মূল) কপির দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি কিনলাম মাত্র এক হাজার ১২ টাকায়। এমন অনেক বই পড়তে হয়। একটি বিষয় নিয়ে দেখা যায় ৩ থেকে ৪টি বই থাকে। নতুন কিনতে গেলে, অনেক দাম দিয়ে কিনতে হয়। আবার অধিকাংশই আমরা শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ করছি। এই স্থান থেকে আজিজ মার্কেটের দোকানগুলো বেশ উপকারে আসে। আর প্রিন্ট (ছাপা) অনেক ভালো। অসুবিধা হয় না।”

সিটি কম্পিউটার অ্যান্ড ফটোস্ট্যাট নামে একটি দোকানের স্বত্বাধিকারী ইউসুফ সওদাগর। কথা হলে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বইগুলো দাম প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। কিন্তু সেই বইগুলো অনুলিপি বা ফটোকপির দাম ২ থেকে ৩ হাজার বা ১০ হাজারে এখানে পাওয়া যায়। তবে দেশের লেখকদের বইগুলো অনুলিপি করা হয় না। শুধুমাত্র বিদেশি লেখকদের বইগুলো করা হয়। তবে আর যাই হোক কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আর আগের মতো ব্যবসা হয় না। অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। কতদিন এভাবে দেওয়া সম্ভব হবে তা জানা নেই।”

বাবুল মেডিকেল বুকসের স্বত্বাধিকারী জমি হাওলাদার বলেন, “আমাদের সব ক্রেতাই ডাক্তার নতুবা মেডিকেলে পড়া শিক্ষার্থী। এখানে দেশি লেখকদের পাশাপাশি বিদেশি লেখকদের বই রয়েছে। বিদেশি লেখকদের বইগুলো দাম বেশি হওয়ায় সবার পক্ষে কেনা সম্ভব হয় না। তাই ফটোকপি আকারে বিক্রি করা হয়। তাদের জন্য সুবিধা হয়।” 

Link copied!