রাষ্ট্রকে মেরামত করতে বিএনপির রূপরেখা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় না এলে নদীতে ভেসে যাবে। রাষ্ট্রকে তারা মেরামত করবে কীভাবে। এটা তাদের স্টান্টবাজি। তারা রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে উন্নয়ন সাধন করেছেন।”
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত খাদ্য উপকমিটির প্রস্তুতি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রস্তুতি সভাটি আওয়ামী লীগের সভাপতি ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত নিয়ে গিয়েছিল, শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে বাংলাদেশ আজকে সমৃদ্ধ, বিএনপি ভোট চুরি করেছে গণতন্ত্রের নামে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোট করে ধ্বংস করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যারা ধ্বংস করে তারা মেরামত করবে কী করে, এটা অত্যন্ত হাস্যকর স্টান্টবাজি।”
বিএনপি মিথ্যাচারের হোতা, তাদের মুখে সত্য বেমানান ও বিএনপিকে কেউ বিশ্বাস করে না বলে দাবি করেন তিনি।
ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা মাঠে রয়েছে কিন্তু সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি উল্লেখ করে কাদের বলেন, “দেশের মানুষ এখনো বিশ্বাস করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে। এটা প্রমাণিত সত্য বিএনপি সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যে রাষ্ট্র বিশ্বের বিস্ময়। ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ, আর আজকের বাংলাদেশে উন্নয়ন অর্জনের যে দৃশ্যপট, এই বাংলাদেশকে চেনাই যায় না। অথচ এই রাষ্ট্রকে তারা (বিএনপি) ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। সেই রাষ্ট্রকে দৃঢ় পদক্ষেপে ডিজিটাল হিসেবে মেরামত করেছেন শেখ হাসিনা। এখন ২০৪০ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন।”
বিএনপি রাষ্ট্র ধ্বংস ছাড়া কী করেছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “গণতন্ত্র ও ভোট চুরি আমরা (আওয়ামী লীগ) করিনি। তারা (বিএনপি) ভোট চুরি করেছে। নির্বাচন জালিয়াতি করেছে। দলীয় লোক দিয়ে আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল। ইয়েস-নো ভোট দিয়ে কী প্রহসন করেছে। তা সবাই জানে। তাদের এমন জালিয়াতি নতুন কিছু না।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধ্বংস করেছে। স্বাধীনতার আদর্শ পদদলিত করেছে। খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। তাদের হাতে তো রক্তের দাগ। তিনি আরও বলেন, “১৫ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর তারা খুনের রাজনীতি শুরু করে। ২১ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করে। আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ কিবরিয়া, খুলনার মুঞ্জুরুল ইমাম, যশোরের শামসুর রহমান, সাংবাদিকরাও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তাদের হাতে তো রক্তের দাগ। কাজেই যারা ধ্বংস করে, তারা মেরামত করবে কীভাবে? এটা নতুন কিছু নয়, এটা তাদের স্টান্টবাজি। এতে তাদের আন্দোলন জমবে না। মানুষ বিভ্রান্তও হবে না।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “বিএনপি মিথ্যাচারের হোতা। তাদের মুখে সত্যের বাণী আরেক আশ্চর্য। কারণ, তারা তো মিথ্যাচার করে, মিথ্যাকে সত্য বানাতে চায়। এ দেশের মানুষ এত বোকা নয়, যে তাদের মিথ্যাচার বিশ্বাস করবে। বিএনপির নেতারা ক্ষমতার লোভে মাঠে নেমেছে। কিন্তু দেশের মানুষকে আজও নামাতে পারনি। কারণ, এ দেশের মানুষ মনে করে মুক্তিযুদ্ধের কান্ডারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংকট থেকে সম্ভবনায় রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের রূপকার। মানুষ বিশ্বাস করে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়া কিছু ভাবেন না। তিনি সব থেকে সৎ এবং মানুষের উন্নয়নে পরিশ্রম করেন।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও খাদ্য উপকমিটির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক র্মিজা আজম, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুল রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাহুল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ।