• ঢাকা
  • শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ৭ সফর, ১৪৪৭

যে কারণে জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৪, ০৭:৫২ পিএম
যে কারণে জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শিক্ষক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার মামলায় শিক্ষক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গণহত্যায় উসকানিদাতা হিসেবে এই মামলায় জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিও করেছে। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আওয়ামী সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইসিটির প্রধান কৌঁসুলি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকার’ উক্তির প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। ১৪ জুলাই রাতের ওই মিছিলে তারা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে আমি কে – রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে – স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ এই স্লোগান ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত শিক্ষক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের কটাক্ষ করেন।

১৬ জুলাই ‘সাদাসিধে কথা‘ নামে নিজের একটি ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিয়ে দুই প্যারায় ছোট্ট মতামত লেখেন ড. মুহম্মদ জাফর। তার নিজ হাতে লেখা চিরকুটও সেখানে আপলোড করা হয়।

সেখানে তিনি লেখেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয়, আর কোনো দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইব না। ছাত্রছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়ত সেই ‘রাজাকার’। আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?”

নিবন্ধনের এ অংশটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষোভ দেখা দেয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনই রূপ নেয়া ২৪‍‍ এর গণঅভ্যুত্থানে। যে কারণে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। 

তবে ১৭ জুলাই দুপুর থেকে শাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে একটি বিবৃতি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ফেসবুক ওয়ালে ও শাবিপ্রবির বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়। এ বিবৃতিতে ‍‍‘ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে শাবিপ্রবিতে আজীবন নিষিদ্ধ করা হলো‍‍’ বলে উল্লেখ করা হয়।

অধ্যাপক জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় উসকানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত তিনি। এই আন্দোলন দমানো এবং হত্যা-গণহত্যা সংঘটনে তার উসকানি তৎকালীন সরকারকে মদদ দিয়েছে। তাই তিনি এই গণহত্যার দায় থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন না।”

তাজুল ইসলাম বলেন, “তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার। এর তদন্ত ও বিচার শুরু হলে তিনি নিশ্চয় সুবিচার পাবেন।”

ড. জাফর ইকবাল বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের পক্ষে যায় এমন বয়ান নির্মাণে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। অভিযোগ আছে, ছাত্রসমাজের যৌক্তিক আন্দোলনগুলোকে অকার্যকর করতেও সাবেক সরকারের হয়ে ভূমিকা রাখেন তিনি। 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!