বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ আটজন আহত হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এসেছেন। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
আহতরা হলেন ফায়ার সার্ভিসকর্মী রবিউল ইসলাম অন্তর (৩০), ফায়ার সার্ভিসকর্মী আতিকুর রহমান রাজন (৩৫), ফায়ারকর্মী মেহেদি হাসান (২৮)। এ ছাড়া নিলয় (৩৫), শাহিন (৪০), রিপন (৪০), রুবেল (৩২), দুলাল মিয়া (৬০) আহত হয়েছেন।
বাচ্চু মিয়া বলেন, “সাতজন ঢামেক হাসপাতালে ও একজন বার্ন ইনিস্টিউটে চিকিৎসাধীন।”
এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। তাদের পাশাপাশি কাজ করছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল। যোগ দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি টিম। পুলিশ আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
বঙ্গবাজার মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ ১০ কোটি মার্কেট, আদর্শ মার্কেট—এই চারটি মার্কেট এক জায়গায় হওয়ায় মূলত সবগুলোকেই লোকজন বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে ডেকে থাকেন। এই চারটি মার্কেটে প্রায় তিন হাজার দোকান রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। নানা রকম কাপড় থাকায় আগুনের তীব্রতা বাড়ছে।
তবে এর মধ্যে বাড়তি বাধা হিসেবে যুক্ত হয়েছে উৎসুক জনতার ভিড়। জনতার ভিড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শত শত মানুষ আগুন নিয়ন্ত্রণে কোনো ধরনের সহায়তা না করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণে ব্যস্ত।
ব্যবসায়ী কালাম বলেন, “ভাই সব তো পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিছু বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষের ভিড়ের কারণে পারছি না। এত বড় বড় কাপড়ের বোঝা নিয়ে নামছি কেউ তো সহায়তা করেই না উল্টো ভিড়ের কারণে সামনে এগোতে পারছি না। এত মানুষের ভিড় না থাকলে আরও দ্রুত মালামাল নিয়ে আসতে পারতাম।”
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উৎসুক জনতার জন্য কাজ করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের কারণে দোকানিরা তাদের মালামালও সরাতে পারছেন না।
সিদ্দিক হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, “শত শত লোক কোনো কারণ ছাড়াই এখানে দাঁড়িয়ে আছে, ছবি তুলছে ও ভিডিও করছে। আর আমরা যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল নিয়ে আসছি, তা দেখেও রাস্তা ছাড়ে না। তাদের সরানোরও কেউ নাই।”