রাজধানীর রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমানের অবৈধ সম্পদের খোঁজে ১২২টি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) সেগুনবাগিচায় অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
দুদক সচিব বলেন, “রাজারবাগ পীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি টিম কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া দেশের ৫৬টি ব্যাংক, দেশের ৬৪ জেলা রেজিস্ট্রার, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবর দুদকের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে কোথায় কোথায় জমি দখল হয়েছে, কিংবা অবৈধ সম্পদ কোথায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।”
এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পীরকে তলব করা হবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “অনুসন্ধানি টিম রাজারবাগ এলাকা পরিদর্শন করেছে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা যদি মনে করেন, তাহলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।”
এছাড়া অনুসন্ধানে যদি আরো সময় প্রয়োজন হয়, দুদক টিম আদালতের অনুমতি নিয়ে কার্যক্রম শেষ করবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যদের টিম গঠন করা হয়।
টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও মো. আলতাফ হোসেন। আর তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, রাজারবাগ শরিফের পীর দিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্মের নামে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সাত হাজার একর জমি দখলের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়। আদালতের নির্দেশে গত ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমানসহ তার অনুসারীরা কমপক্ষে ৮০০টি ভুয়া মামলা করেছেন। সম্প্রতি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা দেওয়ার তথ্যও রয়েছে। এসব মামলার পেছনে রয়েছে সাত হাজার একর জমি ও রাবার বাগান দখল।
এদিকে পীরের পক্ষে তার অনুগতরা এসব মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানা গেছে।
অবশেষে বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ সময় মামলাগুলো স্থগিত করে পীরের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
শুধু তা-ই নয়, এর আগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজারবাগ পীরের সব আস্তানা বন্ধের যে সুপারিশ করে, তা বাস্তবায়নের জন্যও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে পীরের অনুসারীদের বিরুদ্ধে করা আটটি মামলা তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ দরবারের পীর দিল্লুর রহমান এবং তার দরবারের সব সম্পত্তির হিসাব চেয়ে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দরবার শরিফের সব সম্পদের তথ্য খুঁজতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেন।
এছাড়া তাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এবং উচ্চ আদালতে রিটকারী আটজনের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত।
পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন দিল্লুর রহমান।






























