স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও কার্ডিওগ্রাফারের আড়াই হাজারের বেশি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের ‘লিখিত পরীক্ষার খাতায় অস্পষ্টতা’ থাকায় নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাইদুল ইসলাম প্রধান জানান, সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-১ অধিশাখা) আনজুমান আরা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থীদের একটি অংশের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। মন্ত্রণালয় গঠিত নিয়োগ কমিটির দুই সদস্য তদন্ত শেষে এর প্রমাণ পেয়েছেন। এর রিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, স্বল্প সময়ের মধ্যে বাতিল করা এসব পদে নিয়োগের জন্য নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা আগে আবেদন করেছেন, তাদের নতুন করে আবেদনের প্রয়োজন নেই। তারা নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
তবে নিয়োগ বাতিল করে লিখিত পরীক্ষার অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম নিয়ে ‘এখন এক কোটি দেব, পরে আরও পাবেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন প্রথম আলো পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য বিভাগ। তদন্ত শেষে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
২০২০ সালের ২৯ জুন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ৮৮৯টি, মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের ১ হাজার ৬৫০টি এবং কার্ডিওগ্রাফার পদে ১৫০ জনসহ মোট ২ হাজার ৬৮৯টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের লিখিত পরীক্ষা হয়। এতে ২ হাজার ৫২১ জন উত্তীর্ণ হনভ যা মোট পরীক্ষার্থীর ৫ শতাংশের মতো। উত্তীর্ণরা ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ ভালো নম্বর পান।
প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নিতে গিয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা দেখেন লিখিত পরীক্ষায় যেসব প্রার্থী ৮০ নম্বরের মধ্যে ৬০ থেকে ৭৯ পেয়েছেন, তারা মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। অন্যদিকে লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করেন। এরপরই ঘুষের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।