বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আজকে এই সরকার আধিপত্যবাদের তাঁবেদারি করছে এবং তারা একটি পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার শুধু আজকে নয়, তারা ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত একটি তাঁবেদারি সরকারের ভূমিকা পালন করেছে এবং বাংলাদেশকে তারা একটি তাঁবেদারি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল।”
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত স্মরণসভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব কোনোটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি সুদূরপ্রসারী, একটি আধিপত্যবাদী চক্রান্ত। আমরা দেখেছি আজকে এ সরকার আধিপত্যবাদের তাঁবেদারি করছে। পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে তারা।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার শুধু আজকে নয়, ১৯৭২ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত একই ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশকে একটা তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের একটা মোড়ক লাগিয়ে এবং গণতন্ত্রের কথা বলে তারা একই কায়দায় সেই একদলীয় শাসনব্যবস্থা ও তাঁবেদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।”
এ সরকারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে এবং জনগণের কাছে তাদের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে দাবি করে ফখরুল বলেন, “এই সরকারের কীর্তি বর্ণনা করে আমি আপনাদের সময় নষ্ট করতে চাই না। কারণ বলার কোনো জায়গা নেই। এ কয়েক বছরে বাংলাদেশকে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই, কোথাও কোনো ন্যায়বিচার নেই। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই ফ্যাসিবাদী, তাঁবেদার সরকারের ভূমিকা পালন করেছে। গণতন্ত্রের মোড়ক লাগিয়ে একই কায়দায় এক দলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। এই কয়েক বছরে বাংলাদেশকে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কোথাও কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই।”
দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই এ ভয়াবহ জালিম সরকারকে উচ্ছেদ করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি। এ অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আমাদের দেশমাতাকে ক্ষমতায় বসাতে হবে।”
এছাড়া ফখরুল বলেন, “আবরার হত্যার পরে সেদিন যারা সোচ্চার হয়েছিলেন সেই তরুণ সমাজের আজকে কোনো কর্মসূচি দেখতে পাচ্ছি না। পরিবর্তন আসে সব সময় তরুণ এবং যুবকদের মাধ্যমে। আবরার হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আবরার হত্যা এ দেশের যে সামগ্রিক সংকট, সেই সংকটের একটা প্রতিচ্ছবি। বহু আবরার হত্যা হয়েছে এবং আমরা সবাই জানি, আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী গুম করে ফেলা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। কোনোটিই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি সুদূরপ্রসারী আধিপত্যবাদী চক্রান্ত।”
এই অনুষ্ঠানে আয়োজক সংগঠন অ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু সভাপতিত্ব করেন।