বগুড়া শহরের চারমাথা বাস টার্মিনালের পাশে খাজা আবাসিক হোটেল থেকে শ্যুটার মাসুমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে ওই হোটেলের দ্বিতীয় তালার ১০১ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন বলে জানায় পুলিশ।
রোববার (২৭ মার্চ) সকাল সোয়া ৭টার দিকে শহরের চারমাথা বাস টার্মিনালের পাশে খাজা আবাসিক হোটেলর দ্বিতীয় তালার ১০১ নম্বর কক্ষ থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাসুমকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বগুড়ার সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম মাসুম বলেন, “গ্রেপ্তারের সময় খুব স্বাভাবিক ছিল। সেইসঙ্গে সাবলীলভাবে তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া তিনি অবাক হয়েছিলেন কীভাবে আমরা তার সন্ধান পেলাম। তার ধারণা ছিল, তিনি খুব নিরাপদে পালাতে সক্ষম হবেন।”
খোরশেদ আলম আরও বলেন, “গ্রেপ্তারের পরেই মাসুম আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। আর কলেজছাত্রী সামিয়ার নিহতের খবর তিনি টিভিতে দেখার পরে জানতে পারেন। তার উদ্দেশ্য ছিল বগুড়া হয়ে জয়পুরহাট দিয়ে প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যাওয়া।”
এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে বগুড়া পুলিশকে প্রথমে জানানো হয়, শহরের সাতমাথায় ‘খাজা’ নামের কোথাও শুটার মাসুম অবস্থান করছেন। সেই তথ্য জানার পরেই খাজা নামের সেই প্রতিষ্ঠানটির সন্ধান শুরু করে বগুড়া পুলিশ। একপর্যায়ে চারমাথা এলাকার খাজা আবসিক নামের হোটেলটির সন্ধান পাওয়া যায়। এরপরেই দ্রুত সময়ে ইন্সপেক্টর তাজমিলুর ও এসআই খোরশেদ মোটরসাইকেল করে সেখানে পৌঁছান। অভিযুক্তকে কোনো কিছু বুঝে ওঠার সময় না দিয়ে হোটেল ম্যানেজারকে ডিএমপির ডিবি পুলিশের পাঠানো মাসুমের ছবি দেখানো হয়। অনেকটা নিশ্চিত হওয়ার পরেই এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা আবাসিক হোটেলটির দ্বিতীয় তলার ১০১ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর এসআই খোরশেদ দ্রুত সময়ে তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন। এর মধ্যে ইন্সপেক্টর তাজমিলুর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাসুমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠাতে বলেন। এই সবকিছু হয়েছে সকাল সোয়া ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে, অর্থাৎ মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে।
এ সময় মাসুম জানান তার কাছে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র তিনি ঢাকায় লুকিয়ে রেখে এসেছেন। পাশাপাশি তার ব্যবহত মুঠোফোনও তিনি হাতিরঝিলে নষ্ট করে রেখে এসেছেন। এরপরও পুলিশ ১০১ নম্বর রুমের কক্ষটিতে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তল্লাশি চালিয়ে তার কথার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তারপরেই সকাল ৮টার দিকে মাসুমকে পুলিশ সদর থানায় নিয়ে আসে।
এর আগে গত ২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে রিকশা আরোহী সামিয়া নামের এক কলেজছাত্রী নিহত হন।