ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারসহ আফজাল হোসেন এসেছেন অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। মেলায় পছন্দের বই ক্রয়ে এই স্টল থেকে ওই স্টলে ঘুরে ঘুরে হলেন ক্লান্ত। ক্লান্তি দূর করতে আসলেন চায়ের দোকানে। চা পানে ক্লান্তি দূর করতে এসে পড়লেন বিব্রতকর অবস্থায়। চায়ের সর্বনিম্ন মূল্য ৪০টাকা। মান ভেদে যা আবার ১০০ টাকা। চায়ের এই রকম আকাশচুম্বী দামে না পান করেই ফিরলেন আফজাল। বইমেলায় চায়ের মত শীতকালীন হরেক রকম পিঠা থেকে শুরু করে বাহারি আচার, বিরিয়ানি, কাবাবের স্টল চোখে পড়ে। তবে চড়া মূল্যে খাবার বিক্রি হলেও মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। দামে বেশি হলেও মান ও স্বাদ নিয়ে গ্রাহকদের প্রশ্ন রয়েছে।
গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণের পূর্ব দিকে বিস্তৃত খাবারের দোকানগুলোতে চোখ বুলিয়ে ও মেলায় আসা দর্শনার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব বিষয় উঠে আসে।
মেলা প্রাঙ্গণের খাবারের স্টলগুলোর আকাশচুম্বী দাম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে কথা বলেন বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী। যারা সবাই এমন দামে নিয়ে বিরক্ত। প্রশ্ন তুলেছেন মেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে।
আকারম হোসেন আসছেন স্ত্রী নিয়ে একুশে বই মেলায়। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “এখানকার তান্দুরি চা যেটা ১০০ টাকা বিক্রি করে সেই চা রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর যেটা ৪০ টাকা তা বাইরে ২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এই রকম একটা মেলায় চায়ের এমন দাম রাখা সত্যিই বিরক্তিকর।”
তিনি আরও বলেন, “বইমেলা একটা জাতীয় মেলা। এখানে উচিত স্টল বরাদ্দের সময় খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া।”
বেসরকারি স্কুলশিক্ষক এহতেশাম কবির তার ছোট ছেলেকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। বাচ্চাকে কিনে দিয়েছেন পছন্দের বই। পরিচয় করিয়ে দেন বিভিন্ন পিঠা-পুলির সঙ্গে। কিন্তু অতিরিক্ত দামের কারণে খাওয়ার সুযোগ হচ্ছে না। বাচ্চাকে আইস্ক্রিম কিনে দিতে দিতে এহতেশাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার বাচ্চাকে পিঠা খওয়াতে নিয়ে আসছি। যেহেতু আমরা সময়ের অভাবে বাসায় পিঠা বানাতে পারি না। তবে প্রতি পিস দুধচিতয়ের দাম ৬০ টাকা শোনার পর অবাক হয়েছি। অন্যগুলোর দামও কম নয়, পরিমাণ অনুসারে এরকম দাম রীতিমত আমাদের উপর অন্যায়।”
মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী পুলক দাস ক্যাফে হাজী বিরিয়ানিতে চার বন্ধুসহ খেলেন মোরগ পোলাও। খাওয়া শেষে পুলক দাস বলেন, “বইমেলার মত মহতি আয়োজনের মধ্যে খাবারের দাম ও মানের বেহাল অবস্থা। শত শত হাজি বিরিয়ানি নাম নিয়ে বসে আছে, অথচ একটিও আসল হাজি না। দাম যে যার খুশি মত নির্ধারণ করে দিচ্ছে। পরিমানে খুব কম দিয়ে একটি মোরগ পোলাও দাম রাখা হয়েছে ২০০ টাকা। যা বাইরে বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা করে।”
মেলা প্রাঙ্গণের সব কয়টি খাবারের স্টলের দাম বাহিরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এসব খাবারের মধ্যে হাঁসের মাংস বিক্রি হচ্ছে ২৫০, মুরগির ঝাল ফ্রাই ২৫০, সব ধরনের পিঠা ৬০, ফুসকা ৮০, চটপটি ৬০ ও কফি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
ক্যাফে হাজী বিরিয়ানি অ্যান্ড কাবাব হাউজের মালিক লালবাগের সেলিম হাওলাদার খাবারের দাম ও মান নিয়ে সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মেলা উপলক্ষে আমাদের খাবার হোটেলের ভাড়া বেশি দিতে হয়। এজন্য খাবারের দাম একটু বেশি নিতে হয়। এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বেশি।