• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলায় বিদ্যানন্দের পাগলাগারদ


বিজন কুমার
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
বইমেলায় বিদ্যানন্দের পাগলাগারদ
বইমেলায় পাগলাগারদ। ছবি : সংবাদপ্রকাশ

উশকো খুশকো চুল। মুখভর্তি বড় বড় দাঁড়ি। এক হাতে লাঠি। অন্য হাতে বই। ময়লা-ছেঁড়া শার্ট পরা এমন এক ব্যক্তি বসে আছেন গারদে। সেই গারদের দেয়ালে লেখা রয়েছে—পাগল বলে গালি দেই যারে, আদৌ কি আমরা শুনি তারে।

যে গারদের কথা বলা হয়েছে, সাধারণ কোনো গারদ নয়। গারদে যিনি বসে আছেন তিনি কোনো রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ নন। এমন পাগলাগারদের দেখা মিলেছে অমর একুশে বইমেলায় ৬৪৮ নম্বর স্টলের সামনে।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনটি করেছে বিদ্যানন্দ প্রকাশনী। এমন প্রতীকী আয়োজনে পাঠকদের দৃষ্টি আটকে দিচ্ছে তাদের স্টলে। স্বর্ণালী নামের একজন তরুণীকে পাওয়া গেল সেখানে। তিনি বলেন, “দৃশ্যটি অবশ্যই নজর আটকে যাওয়ার মতো।”

বিদ্যানন্দ এবার প্রকাশ করেছে পাগলের গল্পগুচ্ছ নামে একটি বই। বইটিকে কেন্দ্র করে স্টলের সামনে তাদের এমন আয়োজন।

বইটির ভূমিকা থেকে জানা যায়, পাবনার হেমায়েতপুর চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র ঘুরে এই গল্পগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে ১৩ জন মানসিক রোগীর বলা গল্প অনুলিখনের মাধ্যম সেগুলো পাঠযোগ্য করা হয়েছে। সেসব গল্প নিয়ে পাগলের গল্পগুচ্ছ।

স্বর্ণালী বলেন, “আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শারীরিক অসুস্থতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় বেশি। মানসিক রোগটাও যে অসুখ, সেটার দিকে কেউ গুরুত্ব দেয় না। সেই স্থান থেকে বিদ্যানন্দের এই আয়োজন অনেকটাই ভালো।”

সৌরভ ভট্টাচার্য নামের এক পাঠক বলেন, “স্টলটিতে একটা বাস্তবধর্মী জিনিস উপস্থাপন করা হয়েছে। এজন্য অনেকেই হয়তো আসবেন এবং বইটিও কিনবেন। আমিও কিনেছি। বাড়ি গিয়ে পড়ব। গল্পগুলো যদি মজাদার হয়। তবে আমার বই কেনা সার্থক হবে বলে মনে করি।”

বইটি হাতে নিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, “পাগলের বিষয়বস্তু তুলে ধরে হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো একটি বিষয়। পাগলের প্রতি স্বাভাবিক মানুষের অবহেলা থাকে। আমি আশা করি বইটি পড়লে মানুষের এই মনোভাব দূর হবে।”

কথা হলো পাগলের গল্পগুচ্ছ বইয়ের অনুলেখক মিজানুর রহমান সৈকতের সঙ্গে। তিনি বলেন, “পাগলের প্রতিকৃতি দেখে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা পাগলের কথা কেউ শুনি না। কিন্তু তাদেরও গল্প রয়েছে। এই বইটি পড়লে আগ্রহের সঙ্গে পাগলের কথা শোনার চিন্তাধারা বা মনোভাব শোনার ইচ্ছা সৃষ্টি হবে বলে আমরা মনে করি। অনন্ত পাগল দেখলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেবে না। আরও কিছু মেসেজ তো রয়েছেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা অনেক স্থান ঘুরে পাগলদের সঙ্গে কথা বলেছে। একটা পর্যায়ে তাদের কাছে আমরা কিছু গল্প পাই। সেসব গল্পগুলোই সরাসরি পাঠযোগ্য করে তোলা হয়েছে এই বইটিতে।”

পাগলের গল্পগুচ্ছ বইটি ২৫ শতাংশ ছাড়ে মেলায় বইটি বিক্রি হচ্ছে ২২৫ টাকায়।

Link copied!