• ঢাকা
  • সোমবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পৃথিবীর যে দেশে এখন ২০১৭ সাল চলছে!


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম
পৃথিবীর যে দেশে এখন ২০১৭ সাল চলছে!
সূত্র: সংগৃহীত

পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই এখন ইংরেজি বছরের ২০২৪ সাল চলছে। তবে একটি মাত্র দেশ একেবারেই ব্যতিক্রম। একমাত্র সেই দেশেই এখন সময় হচ্ছে ২০১৭ সাল। গল্প নয়, এটি সত্যিই ঘটছে। বিশ্বের এই একটি মাত্র দেশ সব দেশের থেকে পিছিয়ে রয়েছে।

প্রায় ৭ বছর পিছিয়ে থাকা অনেকটা টাইম ট্র্যাভেলের মতোই। সিনেমায় এমন ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। তবে বাস্তবেও এমনটা রয়েছে। পৃথিবীর এই একটি দেশের সময় পুরো বিশ্বের সময়ের থেকে পিছিয়ে রয়েছে। যেখানে সময় যেন এগোয় না। সেখানকার মানুষও যেন এখন পেছনেই রয়ে গেছে।

বিশ্বের এই দেশটি হলো ইথিওপিয়া। আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া। এর উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ইরিত্রিয়া, পূর্বে জিবুতি ও সোমালিয়া, পশ্চিমে সুদান ও দক্ষিণে কেনিয়া। আদ্দিস আবাবা দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। ভূমিবেষ্টিত এই দেশটি আফ্রিকার দ্বিতীয় ঘনবসতিপূর্ণ দেশ।

সব দেশের সময় থেকে ৭ বছর ৩ মাস পিছিয়ে এই দেশ। এখানে ১৩ মাসে বছর পূর্ণ হয়। বছরের শেষ মাসের নাম হচ্ছে পাইগুম। আর সেই মাসের দিন থাকে মাত্র ৬ দিনের। তবে এই দিনগুলো বছরের গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর পেছনে কী কারণ, তাও জানা যায় নি।

জানা যায়, ইথিওপিয়ার ক্যালেন্ডার ৫২৫ খ্রিস্টাব্দে রোমান চার্চ দ্বারা সংশোধন করা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে। তবে ইথিওপিয়া তার নিজস্ব ক্যালেন্ডারকেই অনুসরণ করে আসছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ ছুটির দিনগুলোও আলাদা। বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে পুরোটাই ভিন্ন গতিতে চলে ইথিওপিয়া। তাই সেই ক্যালেন্ডার অনুসারে ১১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে নতুন শতাব্দী উদযাপন করে দেশটির জনগণ।

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলকে সবচেয়ে প্রাচীন বলা হয়। বিশ্বাস করা হয়, মানুষ এখানে প্রথম বসবাস শুরু করে। সেখানে খনন করে ৩.২ মিলিয়ন বছরের পুরনো একটি হোমিনিড কঙ্কাল পেয়েছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিকবিদরা।

বিশ্বের সময়ের চেয়ে ৭ বছর পিছিয়ে থাকা এই দেশটিতে পর্যটকরের ভিড় জমে প্রতিবছরই। তবে ইথিওপিয়া ভ্রমণে পর্যটকদের তেমন কোনো অসুবিধা হয় না বলে জানা যায়। কারণ সময়কাল সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়েই দেশটিতে ভ্রমণ করেন পর্যটকরা।

ইথিওপিয়ার ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিংশ শতাব্দী পর্যন্তও দেশটি আবিসিনিয়া নামে পরিচিত ছিল। প্রথম শতাব্দীতে এখানে আকসুম নামের একটি শক্তিশালী খ্রিস্টান সাম্রাজ্যের পতন হয়। ১৬শ শতকের পরে ইথিওপিয়া অনেকগুলো ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। ১৮৮০-এর দশকে রাজা ২য় মেনেলিক-এর অধীনে এগুলো পুনরায় একত্রিত হয়। ১৯৫০-এর দশক থেকে ইরিত্রিয়া ইথিওপিয়ার একটি অংশ ছিল। কিন্তু ১৯৯৩ সালে এটি বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে।

আধুনিক মানুষের প্রথম বাস ছিল ইথিওপিয়ায়। পরে তারা মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। খ্রিস্টের জন্মের পূর্বে ইথিওপিয়া ছিল রাজা শাসিত। বহুভাষী মানুষের দেশ ইথিওপিয়া। এটি আফ্রিকার একমাত্র দেশ, যে দেশ বিংশ শতাব্দীতে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পরই এর সদস্যপদ পায় দেশটি।

Link copied!