রমজান মাস মুসলমানদের জন্য এক পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ সময়। এই মাসে আত্মসংযম, ইবাদত ও দান-খয়রাতের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি থাকে। পরিবার, বন্ধু বান্ধব। আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে ইফতার করার মধ্যেও থাকে আনন্দ। অনেকেই ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। যা শুধু অতিথিদের আপ্যায়নই নয়, একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সৌহার্দ্যের প্রতীক। তবে সঠিক পরিকল্পনা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইফতার আয়োজন করলে তা সুন্দর ও সফল হয়।
ইফতার দাওয়াতের পরিকল্পনা
ইফতার পার্টির আয়োজনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়। যেমন—তারিখ নির্ধারণ, অতিথি তালিকা প্রস্তুত, বাজেট নির্ধারণ, স্থান নির্বাচন, খাবারের মেনু পরিকল্পনা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা।
তারিখ ও সময় নির্ধারণ
প্রথমে একটি সুবিধাজনক তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। রমজানের প্রথম, মধ্য, অথবা শেষ ভাগে যে কোনো সময় ইফতার আয়োজন করা যেতে পারে। তবে ছুটির দিন হলে অতিথিরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন।
অতিথি তালিকা প্রস্তুত
কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, সেটি আগেভাগে ঠিক করে নেওয়া উচিত। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, সহকর্মী বা প্রতিবেশীদের মধ্যে থেকে তালিকা তৈরি করতে হবে। বেশি অতিথি হলে একটি বড় হল বা খোলা জায়গা ভাড়া নেওয়া যেতে পারে। আর ছোট আয়োজনে বাসাতেই করা যায়।
বাজেট নির্ধারণ
ইফতার আয়োজনের ব্যয় নির্ভর করে অতিথির সংখ্যা, খাবারের মেনু, আয়োজনের স্থান ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের ওপর। বাজেট নির্ধারণের সময় খাবারের গুণগত মান, পরিবেশ ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে হবে।
স্থান নির্বাচন ও পরিবেশ
অতিথির সংখ্যা বেশি হলে কমিউনিটি সেন্টার, হল রুম বা খোলা জায়গা বেছে নেওয়া যেতে পারে। তবে ঘরোয়া আয়োজন হলে ডাইনিং রুম বা ছাদও ব্যবহার করা যায়।
পরিবেশ ও সাজসজ্জা
ইফতারের পরিবেশ আরামদায়ক ও আধ্যাত্মিক হওয়া উচিত। ইসলামিক ব্যাকগ্রাউন্ডের জন্য আরবি ক্যালিগ্রাফি, ছোট বাতি বা লণ্ঠন, আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা ও সুন্দর টেবিল সেটিং ব্যবহার করা যেতে পারে।
খাবারের মেনু পরিকল্পনা
ইফতার মেনু স্বাস্থ্যকর, বৈচিত্র্যময় ও পরিমিত হওয়া উচিত। খুব বেশি ভারী খাবার না রেখে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার রাখা ভালো। খেজুর ও পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। শরবত, দুধ, লাচ্ছি বা স্যুপের আয়োজন করা যায়। ছোলা, মুড়ি ও সালাদ, দই বড়া, সমুচা, পেঁয়াজু, বেগুনির রাখা যায়। ভারী খাবারের আয়োজনে ভাত, বিরিয়ানি বা পোলাও
মাংস বা মাছের বিশেষ পদ সবজি ও ডাল রাখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন আপেল, কলা, খেজুর, আঙুর, পায়েস, জর্দা বা ফিরনির ব্যবস্থা রাখতে পারেন।
পরিবেশন ও ব্যবস্থাপনা
খাবার পরিবেশনের জন্য সার্ভিং স্টেশন বা বুফে পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। পর্যাপ্ত প্লেট, চামচ, টিস্যু ও পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার। পরিবেশনের সময় পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা জরুরি।
অতিথি আপ্যায়ন ও ইসলামী পরিবেশ
ইফতার দাওয়াত শুধু খাওয়া-দাওয়ার জন্য নয়, এটি ইসলামী শিক্ষা, দোয়া ও মিলনমেলার সুযোগও বটে। তাই কিছু ইসলামিক আয়োজন করা যেতে পারে। ইফতারের আগে কুরআন তিলাওয়াত বা হাদিস পাঠের ব্যবস্থা করতে পারেন। নামাজের ব্যবস্থা রাখুন। দোয়ার আয়োজন করুন।
 
                
              
 
																 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    






































