সহশীলতা আমাদের দুর্বলতা নয়। বরং এটি আমাদের শক্তি। সহনশীলতা হলো শিক্ষার পরিচয়, সামাজিক মূল্যবোধের প্রকাশ। বহুত্ববাদী সংস্কৃতির মধ্যে পৃথিবীর সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষের সুষম ও শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান নিশ্চিত করতেই বিশ্বজুড়ে ১৬ নভেম্বর সহনশীলতা দিবসটি পালিত হয়।
সহনশীলতার মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় রয়েছে নানা তাত্ত্বিক, গভীর, জটিল মতবাদ। প্রতিদিনের জীবনেরও কিন্তু সহশীলতার অভাব বেড়েই চলেছে। অসহিষ্ণুতা এখন অভিভাবক-সন্তান, গুরু-শিষ্য, কর্তৃপক্ষ-কর্মী এসব সম্পর্কের মধ্যেও নিত্যসঙ্গী।
জাতিসংঘের মতে, অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ৫টি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে_
আইন প্রণয়ন
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য এবং ঘৃণামূলক অপরাধের শাস্তি যাতে ন্যায়বিচার পরিবেশিত হয় এর জন্য় রাজ্য এবং সরকারগুলোকে আইন প্রণয়নে সহনশীল হতে হবে। মানবাধিকার আইন বাস্তবায়নে তাদের সমানভাবে কাজ করা উচিত।
শিক্ষার প্রসার
অসহিষ্ণুতা প্রায়শই অজ্ঞতা এবং ভয়ের কারণে ঘটে। এটি আত্ম মূল্যবোধ এবং অহংকার চরম অনুভূতির সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে। অতএব শিক্ষা হলো আরেকটি হাতিয়ার যা অসহিষ্ণু আচরণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এই অনুভূতি অল্প বয়সেই বিকশিত হয়। শিক্ষা এমন একটি প্রক্রিয়া যা সারাজীবনের মধ্যে ঘটে। শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের পরিবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এটি। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি সমাজের বিভিন্ন স্থানে সঞ্চালিত হতে পারে।
মতামত স্বাধীনতা
অসহিষ্ণুতার সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপগুলোর মধ্যে একটি হলো যা রাজনৈতিক বা আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জনের জন্য ব্যবহৃত হয়। কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এইভাবে কাজ করে। যে কাজগুলোকে বিদ্বেষপ্রবণ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। তারা সাধারণত মিথ্যা বা ভুল তথ্য এবং কুসংস্কার দিয়ে জনমতকে কাজে লাগায়। এই পরিস্থিতিতে এমন আচরণগুলো এবং প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার কার্যকর উপায় হলো নীতি তৈরি করা। যে নীতি সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে রক্ষা করে এবং উত্সাহিত করে। যাতে এটি মানুষকে তথ্য এবং মতামতের মধ্যে পার্থক্য করতে দেয়।
ব্যক্তিগত সচেতনতা
অসহিষ্ণুতার অনেক ধরনের অভিব্যক্তি হতে পারে। যেমন জাতিগত কলঙ্ক, অপমান, ব্যক্তিগত মনোভাব হতে পারে। এই ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া অসহিষ্ণুতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই কারণেই অসহিষ্ণুতা মোকাবেলার জন্য প্রতিটি ব্যক্তির তার ক্রিয়াকলাপ এবং এর পরিণতির মধ্যে সম্পর্ক উপলব্ধি করা এবং সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
স্থানীয় সমাধান
অসহিষ্ণুতার ব্যাপকতার কারণে যদি বিশ্বব্যাপী সমস্যা হয়, তবে তা মোকাবেলার জন্য স্থানীয় এবং ব্যক্তিগত পদক্ষেপগুলো মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি ব্যক্তির অংশগ্রহণে অসহিষ্ণুতা বিরুদ্ধে লড়াই করে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।