• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

মুসলিম প্রধান জর্ডান কেন ইসরায়েলের পাশে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
মুসলিম প্রধান জর্ডান কেন ইসরায়েলের পাশে
জর্ডান ও ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের ড্রোন ও মিসাইল থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য আমেরিকা ও ব্রিটেনের পাশাপাশি বেশ কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আরব দেশ জর্ডান। দেশটি ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে জর্ডানে হামলার করতে ইরান এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে।

তবে ইসরায়েল ইস্যুতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আরব দেশ হয়েও জর্ডান কেন সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর দেশ ইসরায়েলের পক্ষে? বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে এমন প্রশ্ন জোরালোভাবে করা হচ্ছে।

আর সেই প্রশ্নের উত্তরও মিলেছে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর এক বিবৃতিতে। আবদুল্লাহর তাতে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা নিজের দেশকে রক্ষা করার অংশ হিসেবে ইরানের ড্রোন ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলকে সাহায্য করার জন্য নয়।

পর্যবেক্ষকরা জর্ডানের এমন বিবৃতিকে ‘ভারসাম্য রক্ষার’ কৌশল হিসেবেই দেখছেন। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে তাদের অনেকে বলছেন, হামাস, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যে সংঘাত চলছে সেখানে ‘ক্রসফায়ারে’ পড়তে চায় না জর্ডান। আবার অনেকে বলছেন, জর্ডানে বিদ্যমান রাজতন্ত্রের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক অনেক ভালো। গত ২৫ বছর ধরে জর্ডানের বাদশাহ হিসেবে রয়েছেন দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। তাছাড়া পর্দার আড়ালে জর্ডানের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কও একেবারে খারাপ নয়।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষক এমিলি হোকায়েম বলেছেন, জর্ডান প্রমাণ করতে চেয়েছে যে তারা আমেরিকা এবং ইসরায়েলের ভালো সহযোগী। কিন্তু এ বিষয়টি নেতানিয়াহুর কাছে থেকে আশা করবেন না। গাজায় হামলা বন্ধ এবং পশ্চিম তীর ও জেরুসালেমে উসকানি বন্ধ করার জন্য আম্মানের আহ্বানের সাড়া দেবে না।

তবে ভিন্ন যুক্তিও রয়েছে। ভৌগোলিকভাবে জর্ডানের অবস্থান এমন একটি অবস্থায় রয়েছে যে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে কোনো যুদ্ধ শুরু হলে সেটির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে জর্ডানের ওপর।

জর্ডানের নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক আটলান্টিক কাউন্সিলের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক ডেপুটি ডিরেক্টর মাসুদ মোস্তাজাবি বলেছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এই উত্তেজনা যদি পুরোপুরি যুদ্ধে রূপ নেয় তাহলে এখন যাদের ইসরায়েলের রক্ষাকর্তা বলে মনে করা হচ্ছে তারাও একসময় আক্রান্ত হবে এবং সেই যুদ্ধে তাদেরও টেনে আনা হবে। জর্ডানে বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি শরণার্থী, ভঙ্গুর অর্থনীতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থান – এসব কিছুই তাদের জন্য চিন্তার কারণ।

১৯৯৪ সালে জর্ডান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি হয়, যার মাধ্যমে জর্ডান ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৯ সালে মিশর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবার পর জর্ডান ছিল স্বীকৃতি দানকারী দ্বিতীয় আরব মুসলিম দেশ। গত মার্চ মাসে জর্ডান এবং ইসরায়েলের মধ্যে পানি চুক্তি নবায়ন করার জন্য জর্ডান ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানায়। কিন্তু এর বিপরীতে ইসরায়েল জর্ডানকে পাল্টা শর্ত দিয়েছে। এই শর্ত হচ্ছে– গাজা ইস্যুতে জর্ডান যাতে খুব বেশি শক্ত অবস্থান না নিয়ে তাদের অবস্থান নরম করে।

Link copied!