• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পাকিস্তানে ১২২ হিন্দু দম্পতির গণবিবাহ কেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৪, ০২:০৩ পিএম
পাকিস্তানে ১২২ হিন্দু দম্পতির গণবিবাহ কেন
করাচিতে গণবিবাহের অনুষ্ঠান। ছবি-সংগৃহীত

মুসলিম অধ্যুষিত দেশ পাকিস্তানেও এবার ১২২ হিন্দু দম্পতির গণবিবাহ সম্পন্ন হলো। দেশটির করাচি শহরের দক্ষিণে এক সামিয়ানার নিচে আলো ঝলমলে ঝাড়বাতির আলোয় এই গণবিবাহ সম্পন্ন হয়। 

গত ৭ জানুয়ারি এই গণবিবাহ আয়োজনের প্রধান কারণ ছিল দারিদ্র এবং নিপীড়ণকে শক্তহাতে প্রতিহত করা।

গত বছর আফগানিস্তানের কাবুলেও এমন একটি গণবিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল। ওই গণবিবাহে ৫০টি গরীব দম্পতির বিবাহ সম্পন্ন হয়।

করাচির গণবিবাহ অনুষ্ঠানে লাল বেনারসি পরিহিত ২৫ বছরের কনে কল্পনা দেবী বলেন, ‘আমি এখানে বিয়ে করছি, কারণ আমার পরিবার গরীব। তাদের পক্ষে বিয়ের আয়োজনে টাকা খরচ করা সম্ভব না।’

দরিদ্রতার পাশাপাশি এরকম একটি বিশেষ দিন আরো অনেক কনের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার পরও কল্পনার উৎসাহের কোনো কমতি নেই। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি সবাই যাতে এখানে বিয়ে করতে পারে।‍‍’

পাকিস্তানে বিয়ে মানেই অনেক খরচ। কারণ কনের পরিবারকে অধিকাংশ সময়েই বরের পরিবারকে যৌতুক দিতে হয়। এইজন্য অনেক মেয়ের বিয়ে পিছিয়ে যায়।

কনে নেহা পার্মারের ২৫ বছর বয়সী ভাই সতীশ পার্মার বলেন, ‘এটা আমার জন্য ভালো সুযোগ, কারণ আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। আমার বোনের বিয়ের জন্য এত অর্থ জোগাড় করা সম্ভব ছিল না।’

পাকিস্তান আর্থিক দুরবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। মানবাধিকারকর্মীরা এতদিন বলে এসেছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন।

এই গণবিবাহের আয়োজক পাকিস্তান হিন্দু পরিষদের ভাষ্যমতে, গত বছরের আদমশুমারি অনুযায়ী পাকিস্তানের ২৪ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মোট ৮০ লক্ষ মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

মানবাধিকারকর্মীরা বলেন, ‘হিন্দু নারীদের বিয়ের মাধ্যমে প্রায়ই জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে মুসলমান বানানো হয়।’

গত জানুয়ারিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, দেশটিতে ১৩ বছর বয়সী বা তার থেকেও কম বয়সী মেয়েদের ‘অপহরণ করে দূরে নিয়ে গিয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের ধর্মান্তরিত করে মুসলমান বানানো হয়।’

অধিকারকর্মী শিব কাচ্চি জানান, তিনি এরকম ১৭০টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন যাদের মেয়েদের জোরপূর্বক ২০২২ সালে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।

পুলিশের তথ্যমতে, মেয়েগুলো আসলে সচ্ছল মুসলমান পুরুষদের সঙ্গে পালিয়ে যায় দরিদ্রতা কাটানোর জন্য।
 

Link copied!