• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে ফের ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৩, ০৭:৩২ পিএম
যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে ফের ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র
জাতিসংঘ (ফাইল ছবি)

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে এই প্রথম উন্মুক্ত বিতর্কের আয়োজন করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য দেশ ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য যুদ্ধ বিরতির দাবি করেছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশ ১৫টি। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া সহ পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের একটি ভেটো রয়েছে। এই ভেটোর কারণেই সহিংসতা বন্ধ করতে পারে এমন একটি প্রস্তাব দিতে ব্যর্থ হচ্ছে এই পরিষদ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের কট্টর মিত্র হওয়ার কারণে গত সপ্তাহে পরিষদের ১২ সদস্যের দেওয়া যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। ওই প্রস্তাবে ইসরায়েলে আত্মরক্ষার অধিকারের উপর জোর দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না বলে উল্লেখ করে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে একটি রাশিয়ান খসড়া প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

মঙ্গলবারের উম্মুক্ত বিতর্কে প্রায় ৯০টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিল। এরমধ্যে ৩০ জন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীও ছিলেন। গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং প্রতিদিন বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের নির্বিচার হত্যা বন্ধ করতে উপস্থিত সবাই স্লোগান দেন।

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি বলেছেন, “আমরা এই নিরাপত্তা পরিষদ দুই দুইবার যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব উপস্থাপন করেও তা গ্রহণ করাতে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের এই অক্ষমতার জন্য দুঃখই করতে হয়।”

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি জাতিসংঘে ২২-সদস্যের আরব গ্রুপের পক্ষে বক্তৃতা করেন। তিনি গাজাকে ধ্বংস করার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে না পারায় পরিষদের ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, কূটনীতিকদের যুদ্ধ বন্ধ, উভয় পক্ষের বেসামরিক হত্যার নিন্দা এবং অনাহার রোধের পাশাপাশি ফিলিস্তিনে সম্মিলিত শাস্তি কেন,” এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণেরও আহ্বান জানান।

সাফাদি বলেন, ফিলিস্তিনে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করা হবে, এ বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই ২ বিলিয়ন আরব ও মুসলিমদের আশ্বস্ত করতে হবে।

ইউএস স্টেট সেক্রেটারি এন্টনি ব্লিঙ্কেন নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন নতুন রেজুলেশনকে সমর্থন করতে। যেটিতে যুদ্ধ বিরতি সংক্রান্ত মূল বিষয় অন্তর্ভুক্ত।

নিউজ এজেন্সি এএফপির বিশ্লেষণ অনুসারে খসড়াটিতে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং ‘সব রাষ্ট্রের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার’কে রক্ষা করবে বলা হয়েছে। এটি সাহায্যের জন্য ‘মানবিক বিরতি’ সমর্থন করবে কিন্তু সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি নয়।

মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন,“ইসরায়েলকে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এড়াতে সম্ভাব্য সব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, এবং গাজায় সাহায্য পাঠাতে ‘মানবিক বিরতি’ বিবেচনা করা উচিত।

এদিকে রাশিয়া তার নিজস্ব পাল্টা রেজোলিউশন পেশ করেছে। এই সপ্তাহের শেষের দিকে ভোট হতে পারে।

জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, “সারা বিশ্ব নিরাপত্তা পরিষদের কাছ থেকে দ্রুত এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান আশা করছে।”

নিরাপত্তা পরিষদের অচলাবস্থার মধ্যেও, জর্ডান এবং রাশিয়া বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদকে আবারও বৈঠকে বসার অনুরোধ করেছেন।

প্রায় তিন সপ্তাহ আগে হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি শহরে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১৪০০ লোককে হত্যা করে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক ছিল এবং ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে গেলে এই যুদ্ধ শুরু হয়। ওই দিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে। অন্তত ৫ হাজার ৭৯১ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। গাজায় পানি, খাদ্য, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। গাজায় এখনও অবিরাম বোমা হামলা করে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সূত্র-আল জাজিরা

 

Link copied!