• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দিকে তেড়ে গেলেন বিক্ষোভকারী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২৩, ০১:০৬ পিএম
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দিকে তেড়ে গেলেন বিক্ষোভকারী

ইউরোপীয় সার্বভৌমত্বের ওপর বক্তৃতা দিতে নেদারল্যান্ডসে গিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আর সেখানেই তার দিকে ছুটে আসেন একজন বিক্ষোভকারী। যদিও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তার আগেই তাকে ধরে মাটিতে ফেলে দেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ম্যাক্রোঁ আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে।

পরে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছে গাড়ি থেকে নামেন ম্যাক্রোঁ, এ সময় তাকে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন। এরপর একজন বিক্ষোভকারী তার দিকে দৌড়ে আসেন। তবে তার কাছে আসার আগেই ওই ব্যক্তিকে ধরে মাটিতে ফেলে দেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। তাকে যখন মাটিতে ধরে রাখা হয়, তখনো তিনি স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি ফরাসি ভাষায় পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং জনপ্রিয় একটি গান বলতে থাকেন।

এর আগে চীন সফরের পর আবারও বাকি বিশ্বের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ইউরোপকে আরও শক্তিশালী করার ডাক দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নেদারল্যান্ডসে এক রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়ে এক ভাষণে তিনি বলেছেন, ইউরোপের এখন প্রয়োজন প্রকৃত সার্বভৌমত্ব অর্জন করা।

কয়েক দিন ধরে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের ভেতরে ও বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন। চীন সফর শেষে দেশে ফেরার সময় তিনি দু-দুটি সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের বদলে ইউরোপের ‘কৌশলগত সার্বভৌমত্ব‍‍’-এর ওপর জোর দিয়েছেন। তাইওয়ান প্রশ্নে ইউরোপের নরম অবস্থানেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।

মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে দেওয়া সেই ভাষণে ইউরোপের ভবিষ্যতের সেই একই রূপরেখা তুলে ধরেছেন ম্যাক্রোঁ।

ম্যাক্রোঁ বলেছেন, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নিজস্ব পরিচয় বজায় রাখতে হলে ইউরোপকে বাইরের জগতের ওপর নির্ভরতা কমাতেই হবে। অর্থাৎ নিজস্ব স্বার্থ অনুযায়ী সহযোগী বাছাই এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেদেরই বেছে নেওয়ার পথে এগোতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

তার মতে, শুধু বর্তমান বিশ্বের নাটকীয় বিবর্তনের সাক্ষী হয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকার পরিবর্তে খোলা মনে সহযোগিতার মাধ্যমেই সেই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাশাপাশি ইউরোপকে তৃতীয় পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার পক্ষে যে অবস্থান তিনি নিয়েছেন, তা-ও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউশ মোরাভিয়েৎস্কি ম্যাক্রোঁর এই অবস্থানের বিরোধিতা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা ইউরোপের নিরাপত্তার ‘দৃঢ় ভিত্তি‍‍’৷ যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ অন্যান্য দেশেও মাক্রোঁর বক্তব্যের সমালোচনা শোনা গেছে।

অবশ্য মঙ্গলবারের ভাষণের মধ্যেই প্রতিবাদের মুখে পড়েন ম্যাক্রোঁ৷ বিক্ষোভকারীরা ব্যানার হাতে চিৎকার করে প্রশ্ন তোলেন, ‘ফরাসি গণতন্ত্র কোথায়?‍‍’ অবসর ভাতা কাঠামোর সংস্কারকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে সম্প্রতি প্রবল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন ম্যাক্রোঁ। হেগ শহরে ভাষণের সময়েও তাকে ‘হিংসা ও দ্বিচারিতার প্রেসিডেন্ট‍‍’ হিসেবে সমালোচনা শুনতে হয়েছে।

Link copied!