• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ইয়েমেনে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের হামলা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৪, ১০:৪১ এএম
ইয়েমেনে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের হামলা
চারটি আরএএফ টাইফুন যুদ্ধবিমান হামলায় অংশ নিয়েছে বলে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে

ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে যৌথ বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। লোহিত সাগরে একের পর এক জাহাজে হামলার পর মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী এ হামলা চালায়।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, হুথি গোষ্ঠীর ওপর সোমবারের এই হামলায় আটটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি ভূগর্ভস্থ স্টোরেজ সাইট এবং হুথি ক্ষেপণাস্ত্র ও নজরদারি সক্ষমতাও রয়েছে।

ইরান-সমর্থিত হুথিরা লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট দিয়ে যাতায়াতকারী ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য বলেছে, তারা ‘বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ’ রক্ষা করার চেষ্টা করছে।

পেন্টাগনের জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে হুথিদের বিরুদ্ধে ‘আনুপাতিক এবং প্রয়োজনীয় আরও একটি হামলার’ কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে : “আমাদের লক্ষ্য উত্তেজনা হ্রাস করা এবং লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা, তবে আসুন আমরা হুথি নেতৃত্বের প্রতি আমাদের সতর্কতা পুনর্ব্যক্ত করি: আমরা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চলে জীবন এবং বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ রক্ষা করতে দ্বিধা করব না। ক্রমাগত হুমকির মুখে গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ।”

ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্রের এটি অষ্টম হামলা। আর গত ১১ জানুয়ারি যৌথ হামলা চালানোর পর এটি যুক্তরাজ্যের সাথে দ্বিতীয় যৌথ অভিযান। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থনে এই হামলা চালানো হয়েছে।

বিবিসি বলছে, মার্কিন বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস আইজেনহাওয়ারের যুদ্ধবিমানগুলো সোমবারের হামলায় যুক্ত ছিল। আর চারটি আরএএফ টাইফুন যুদ্ধবিমান সোমবারের হামলায় অংশ নিয়েছে বলে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে।

অন্যদিকে হুথি-চালিত আল মাসিরাহ টিভি ইয়েমেনের সানা, তাইজ ও বায়দা প্রদেশে হামলার খবর দিয়েছে, যার মধ্যে রাজধানীর কাছে অবস্থিত আল-দাইলামি বিমানঘাঁটিও রয়েছে।

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুথিদের হামলা লোহিত সাগরে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওই অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিরোধী ইরানের মিত্ররাও লেবানন, সিরিয়া ও ইরাক থেকে মার্কিন স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু বানানোয় এতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এর মাঝেই হুথিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

হুথিরা মূলত ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু জাইদি নামের উপসম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী। বেশিরভাগ ইয়েমেনি হুথিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসবাস করে। পাশাপাশি সানা এবং ইয়েমেনের উত্তরে হুথিরা লোহিত সাগরের উপকূলরেখাও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

মূলত ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে গত প্রায় তিন মাস ধরে লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট ও ইসরায়েলগামী জাহাজে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে আসছে হুথি বিদ্রোহীরা। ইরান সমর্থিত সশস্ত্র এই গোষ্ঠী জানিয়েছে, যত দিন গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা চলবে তত দিন তারা হামলা চালিয়ে যাবে।

এদিকে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হুথিদের এসব হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক প্রভাব পড়েছে। লোহিত সাগর থেকে মিসরের সুয়েজ খাল হয়ে যেসব জাহাজ ইউরোপে যেত; সেসব জাহাজকে এখন আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি। এর জেরে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর অবস্থানে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের গাজার বাইরেও নতুন করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Link copied!