• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সন্ধ্যায় আঘাত হানছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়, আশ্রয়কেন্দ্রে লাখো মানুষ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩, ১২:০৩ পিএম
সন্ধ্যায় আঘাত হানছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়, আশ্রয়কেন্দ্রে লাখো মানুষ

আরব সাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ ভারত-পাকিস্তান উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি গুজরাট উপকূল থেকে ২০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উপকূলে ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটারের বেশি বেগে বাতাস বইতে পারে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাটাগরি-৩ এর ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়’ ভারতের গুজরাট এবং পাকিস্তানের করাচি উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গুজরাটের উপকূলীয় ও নিচু এলাকা থেকে ৭৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত ভারত সব ধরনের মাছ ধরা কার্যক্রম স্থগিত করেছে। বন্দরের সব কার্যক্রমও বন্ধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও এনডিটিভি পৃথক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমুদ্র উপকূলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত প্রায় ১২০টি গ্রামের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বিবিসি বলছে, ঝড়টি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে ৬২ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে এবং স্কুলগুলোতে ৭৫টি ত্রাণশিবির স্থাপন করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে বেসামরিক বিমান চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, সকাল ৮টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ গুজরাট উপকূল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। আজ বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে ভারতের গুজরাটের কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মান্ডভি ও করাচির মধ্যবর্তী জাখাউ বন্দর অতিক্রম করবে। এর প্রভাবে ভারতের গুজরাটের কচ্ছ, দেবভূমি দরগা এবং জামনগরে অতিবৃষ্টি হতে পারে। এমনকি অতিবৃষ্টির কারণে কুচ জেলায় বড় ধরনের ভূমিধস হতে পারে।  

গুজরাটের উপকূল এলাকায় অনেক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গুজরাটগামী ৯৫টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। ট্রেন বাতিল হওয়ায় যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। গুজরাটে ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাহত হয়েছে যোগাযোগব্যবস্থাও।

গুজরাট উপকূলে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৭টি দল এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি দল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন তারা। গুজরাটের দুটি বিখ্যাত মন্দির, দেবভূমি দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দির এবং গির সোমনাথ জেলার সোমনাথ মন্দির বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল উপকূলীয় ১৬৪ গ্রাম প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সর্বাত্মক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি দেশটির তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ এর প্রভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত ভূমিধসসহ যে কোনো পরিস্থিতি বা দুর্যোগ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।

ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আটটি রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গুজরাট ছাড়াও সতর্কতা জারি হয়েছে কেরালা, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, দমন ও দিউ, লক্ষদ্বীপ এবং দাদর ও নগরহাভেলিতে। এরইমধ্যে মুম্বাইয়ে ‘বিপর্যয়ের’ কারণে জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র।

Link copied!