• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

৬৭ কোটি টাকায় বিক্রি হলো একটি হাতঘড়ি!


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ০৪:২০ পিএম
৬৭ কোটি টাকায় বিক্রি হলো একটি হাতঘড়ি!

চীনের কিং রাজবংশের শেষ সম্রাট আইসিন-গিওরো পুইয়ের ব্যবহৃত একটি হাতঘড়ি ৬৭ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। হংকংয়ের একটি নিলাম কেন্দ্রে ঘড়িটি বিক্রি হয়। হংকংয়ে বসবাসকারী একজন এশীয় সংগ্রাহক এটি কিনেছেন। বিশ্বে এই মডেলের মাত্র আটটি ঘড়ি রয়েছে।

বুধবার (২৪ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিলাসবহুল ঘড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি ‘পাটেক ফিলিপের’ এই ঘড়ির মডেলটি অত্যন্ত বিরল হওয়ায় এর দাম এত বেশি।

লন্ডনভিত্তিক নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস হাউস জানিয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক বন্দী হওয়ার সময় পুই তার রাশিয়ান দোভাষীকে ঘড়িটি উপহার দিয়েছিলেন। নিলামে ঘড়িটির দাম উঠেছে ৫ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার। ক্রেতার প্রিমিয়াম ফি দিয়ে মোট মূল্য ৬ দশমিক ২ মিলিয়নে পৌঁছেছে। ঘড়িটির যা ইতিহাস রয়েছে তাতে এর দাম আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল।

৮৬ বছরের ঘড়িটি পাঁচ বছর সাইবেরিয়াতেও ছিল। চীনের সাবেক এই শাসক সোভিয়েত ইউনিয়নের ওই অঞ্চলে পাঁচ বছর ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা যখন হেরে যাচ্ছিল, তখন পালানোর চেষ্টা করেন পুই। তবে তাকে একটি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। তারা তাকে সাইবেরিয়ার একটি শহরে নিয়ে যায় এবং তার উন্নত জীবন নিশ্চিত করে। সোভিয়েত ইউনিয়নে তিনি প্রায় পাঁচ বছর বাস করেছেন।

পুইয়ের জীবনের ওপর ভিত্তি করে ১৯৮৭ সালে নির্মাণ করা হয় অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র ‘দ্য লাস্ট এম্পারার’।

ফিলিপস হাউস এশিয়ার প্রধান টমাস পেরাজি বলেছেন, একসময় সম্রাটের কাছে ছিল এমন যেকোনো হাতঘড়ির মধ্যে এর দাম সবচেয়ে বেশি

ঘড়িটি ১ দশমিক ২ ইঞ্চি ব্যাসের এবং এটি তৈরিতে প্লাটিনাম ব্যবহার করা হয়েছে। এর ডায়ালগুলো লেখা হয়েছে আরবি সংখ্যায়। এ ছাড়া এই ঘড়ি দিয়ে পৃথিবীর অবস্থান অনুযায়ী চাঁদের অবস্থান জানা যেত। পুই কীভাবে এই ঘড়িটি কিনেছিলেন বা পেয়েছিলেন তা জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে এটি প্যারিসের একটি বিলাসবহুল দোকান থেকে বিক্রি হয়েছিল।

আইসিন-গিওরো পুইয়ে ১৯০৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন চীনের কিং রাজবংশের শেষ সম্রাট। জন্মের মাত্র দুই বছর বয়সে অর্থাৎ ১৯০৮ সালে শিশু বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। চার বছরের কম সময়ের মধ্যে ১৯১২ সালে বিদ্রোহের মাধ্যমে তাকে উৎখাত করা হয়। তবে তিনি তখনো বেইজিংয়ের রাজপ্রাসাদে থাকার অনুমতি পেয়েছিলেন। ১৯১৭ সালে সংক্ষিপ্তভাবে সম্রাট হিসাবে পুনর্বহাল করা হয় তাকে।

১৯২৪ সালে তিনি বেইজিং থেকে পালিয়ে যান এবং জাপানের সঙ্গে একটি জোট গঠন করেন। পরবর্তী সময়ে তাকে উত্তর-পূর্ব চীনের মাঞ্চুরিয়া অঞ্চলের মানচুকুও-এর পুতুল সম্রাট করে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর, পুইকে সোভিয়েত বাহিনীর হাতে বন্দী করা হয় এবং যুদ্ধবন্দী হিসেবে রাখা হয়।

সম্রাটদের মালিকানাধীন অন্য ঘড়িগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ান সম্রাট হেইলে সেলাসির একটি ঘড়ি ২০১৭ সালে ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া একই সালে একটি রোলেক্স ঘড়ি যা ভিয়েতনামের শেষ সম্রাট বাও দাইয়ের কাছে ছিল। সেটি নিলামে ৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল।

Link copied!