গাজায় জিম্মি করা এক নারীর ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। হামাসের হাতে জিম্মি হওয়াদের এটিই প্রথম ভিডিও। সংক্ষিপ্ত ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, মিয়া স্কিম নামের জিম্মি হওয়া নারী একটি বিছানায় শুয়ে আছেন। ফ্রেমের বাইরে কেউ একজন তার ডান হাত ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে। হাতের ওপর লম্বা এক আঘাতের চিহ্ন স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।
মিয়া স্কিম ২১ বছর বয়সী একজন ফরাসি বংশোদ্ভুদ ইসরায়েলি মহিলা। গাজা উপত্যকায় হামাসের হাতে জিম্মি হয়েছেন। সোমবার (১৬ অক্টোবর) হামাস যে ভিডিওটি প্রকাশ করেছে, সেটি গাজায় জিম্মি করা কয়েক ডজন লোকের মধ্যে প্রথম কোনো ভিডিও ফুটেজ।
ক্যামেরার সামনে কথা বলার সময় স্কিমকে ফ্যাকাশে দেখা গেছে। তিনি মাথা উঁচু করে সোজা হয়ে বসে আছেন। সে জানায়, তাকে আহত করা হয়েছিল এবং গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ক্যামেরার সামনে সে পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার আকুতি জানায়।
ওই নারী ক্যামেরার সামনে যখন কথা বলছেন,তখন ওই এলাকায় উচ্চস্বরে গর্জন শোনা যায়।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) তেল আবিবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় স্কিমের মা তার মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার ও বিশ্ব নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
তার মা কেরেন শারফ স্কিম মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে বলছেন, “আমি আমার বাচ্চাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বের কাছে অনুরোধ করছি, সে আনন্দ-উৎসবে গিয়ে এখন গাজায় জিম্মি হয়ে আছে।”
অপহৃতা ওই নারীর মা আরও বলেন, “সোমবার পর্যন্ত তিনি জানেন না যে তার মেয়ে বেঁচে আছে, নাকি মারা গেছে। শুধু জানতেন তাকে অপহরণ করা হয়েছে। ভিডিও দেখে জানলাম সে বেঁচে আছে। দেখলাম সে অনেক ব্যথায় কাতর। তাকে যা বলতে বলা হচ্ছে সে তাই বলছে।”
তিনি সাংবাদিকদের বলেন,অন্যান্যদের সঙ্গে তার মেয়েকেও যেন জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করা হয়।
স্কিমের মা সোমবার সিএনএনকে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন তার মেয়ের ধৈর্য এবং মনোবল তাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে। সে খুব শক্তিশালী। আমরা সকলেই বিশ্বাস করেছিলাম সে বেঁচে আছে। আমরা জানতাম সে কখনই হাল ছাড়বেন না।
ওই ভিডিওটি কখন এবং কোথায় তোলা হয়েছিল সিএনএন তা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা গত সপ্তাহে অপহৃত স্কিমের পরিবারকে অপহরণের বিষয়টি জানিয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।
আইডিএফের মুখপাত্র মেজর লিবি ওয়েইস মঙ্গলবার সিএনএনকে বলেছেন, যে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি ইসরায়েলের বেসামরিক জনগণের উপর হামাসের আরেকটি মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালানোর মতো ঘটনা।
সিএনএন প্রতিবেদক ইভানা কোত্তাসোভা’র প্রতিবেদন অবলম্বনে।