• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

গ্রিসে ট্রেন দুর্ঘটনা : নিহত বেড়ে ৫৭


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩, ০২:২৮ পিএম
গ্রিসে ট্রেন দুর্ঘটনা : নিহত বেড়ে ৫৭

গ্রিসে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি গ্রিসের সাধারণ মানুষের ক্ষোভও বাড়ছে।

শুক্রবার (৩ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ঘটনা তদন্তে নিযুক্ত এলেনি জাগেলিডু বলেন, “৫৭ জনের শরীর থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।”

ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার জন্য রেল শ্রমিকরা সরকারের উদাসীনতাকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) এক দিনের রেল ধর্মঘট পালন করেছেন। এ ছাড়া এথেন্সে টানা দ্বিতীয় দিন প্রতিবাদ জানিয়েছেন দুই হাজারের অধিক মানুষ।

সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০০০ সালের দিকে গ্রিস যে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছিল, সেই সময় নেওয়া কৃচ্ছ্বতাসাধন নীতির কারণেই ট্রেনে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

এর আগে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কায়রাকোস মিতসোতাকিস বলেন, “এটি একটি মর্মান্তিক মানব ত্রুটি। আমরা ন্যায়বিচারে কাজ করব। রাষ্ট্র জনগণের পাশে থাকবে। এর জন্য সবাইকে জবাবদিহি করা হবে।”

তার এ মন্তব্য বিক্ষোভকারীদের আরও উসকে দিয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কস্টাস কারামানলিস পদত্যাগ করেছেন।

এ ছাড়া মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার জন্য স্থানীয় স্টেশন মাস্টারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় তিনি সিগন্যালের দায়িত্বে ছিলেন। যদিও স্টেশনমাস্টার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় লারিসার কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সময় যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে প্রায় ৩৫০ যাত্রী ছিলেন। ট্রেনটি লারিসা শহর ছেড়ে যাওয়ার পরে একটি টানেল থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

লারিসার গভর্নর কন্সতানতিনোস আগরোসতোস স্থানীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, “সংঘর্ষ অনেক শক্তিশালী ছিল। যাত্রীবাহী ট্রেনটির চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুটি বগি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। ট্রেনের ভেতর থেকে প্রায় ২৫০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।”

যদিও দুটি ট্রেন কীভাবে একই লাইনে এলো, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

দুঃস্বপ্নের ১০ সেকেন্ড

ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে জীবন বাঁচিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী স্টারজিওস মিনেনিস। তিনি বলেন, “আমরা একটা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এরপর দ্রুত আগুন লেগেছিল। ট্রেনের কামরার মধ্যে আমরা গড়াগড়ি খাচ্ছিলাম। তারপর এটি গড়িয়ে একদিকে থামল, তারপর সবার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হলো। চারদিকে তার ঝুলছে, আগুন। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে গিয়েছিল। আমরা আগুনে পুড়ে যাচ্ছিলাম।”

তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “১০-১৫ সেকেন্ড ধরে চরম বিশৃঙ্খলা চলেছে। একজন আরেকজনের ওপর গিয়ে পড়েছে, ওপর থেকে তার ঝুলছে, চারিদিকে ভাঙা জানালা, লোকজন চিৎকার করছে।”

একজন উদ্ধারকর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “আমি আমার পুরো জীবনে এ রকম ঘটনা দেখিনি। খুবই মর্মান্তিক দৃশ্য। পাঁচ ঘণ্টা পরেও আমরা এখানে মৃতদেহ খুঁজে পাচ্ছি।”

গ্রিসের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকরতম দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে এটিকে। দেড় শর বেশি দমকল কর্মী এবং ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করেছে।

Link copied!