• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বাসি পাউরুটি দিয়ে বানানো হয় ‘ব্রেড বিয়ার’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৩, ০২:১৯ পিএম
বাসি পাউরুটি দিয়ে বানানো হয় ‘ব্রেড বিয়ার’

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় বিয়ার। সোনালী এই পানীয় তৈরি করতে উপাদান হিসেবে মল্ট, হপস, পানি এবং ইস্ট ব্যবহৃত হয়। তবে এবার বিয়ার তৈরির প্রক্রিয়াকে আরও সৃজনশীল করতে বাসি পাউরুটি দিয়ে বানানো হচ্ছে “ব্রেড বিয়ার”।

স্বাদের দিক থেকেও এতে কোনো ঘাটতি থাকছে না। বাসি রুটি দিয়ে বিয়ার? সেটা কি আদৌ সম্ভব? বার্লিনের এক বিয়ার প্রস্তুতকারক সেই প্রক্রিয়া জানেন।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। জার্মানির বার্লিনের বিয়ার প্রস্তুতকারক মিশায়েল লেম্বকে বাসি পাউরুটি দিয়ে অ্যালকোহল-মুক্ত বিয়ার তৈরি করছেন। খাবারের অপচয় রোধ ও টেকসই প্রক্রিয়ার কথা চিন্তা করে তিনি ব্রেড বিয়ার তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন।

তিনি বলেন, “খাবারের অপচয় ও টেকসই প্রক্রিয়া আজ বিশাল চর্চার বিষয় হয়ে ওঠায় আমাদের মাথায় ব্রেড বিয়ারের আইডিয়া এসেছিল। বিশেষ করে বিশাল পরিমাণে পাউরুটি তৈরি করা হয়, যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ শেষ পর্যন্ত শুকরের খোরাক হিসেবে অথবা বায়ো গ্যাস প্লান্টে কাজে লাগাতে হয়। সেটা সত্যি দুঃখের বিষয়। সে কারণে আমরা এই বিয়ারের উপাদান হিসেবে পাউরুটিও ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। এভাবে বিষয়টির প্রতিও মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম।”

প্রায় ২৭ হাজার বোতল “ব্রেড বিয়ার” তৈরি করতে ৭৫ কিলোগ্রাম বাসি পাউরুটির প্রয়োজন হয়। তবে সব ধরনের পাউরুটি বিয়ার তৈরির জন্য উপযুক্ত নয়। পাউরুটি দিয়ে পানীয় তৈরি মোটেই নতুন কোনো আবিষ্কার নয়৷ কয়েকশো বছর ধরে সেই ধারা চলছে। তবে গত কয়েক বছরে ব্রেড বিয়ারের পুনর্জন্ম ঘটেছে।

বার্লিনের মাস্টার বেকার টেও ক্যোস্টার নিখুঁতভাবে উৎপাদনের পরিকল্পনা করলেও কিছু অবশিষ্ট থেকেই যায়। তবে সব ধরনের রুটি বিয়ার তৈরির জন্য উপযুক্ত নয়।

মাস্টার বেকার হিসেবে টেও ক্যোস্টার বলেন, “সেই পাউরুটি এমন হতে হবে, যার মধ্যে শস্য ছাড়া অন্য কোনো উপাদান থাকবে না। অর্থাৎ কিশমিশ, বাদাম, তেলের বীজ থাকলে চলবে না। কারণ গাঁজন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটবে এবং এমন সুস্বাদু বিয়ার তৈরি হবে না।”

জার্মানিতে কোনো পানীয়র মধ্যে অ্যালকোহলের মাত্রা শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত থাকলে সেটিকে অ্যালকোহল-ফ্রি হিসেবে গণ্য করা হয়। ব্রিউয়িং প্রক্রিয়ার পর বিয়ার শুধু বোতলে ভরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়।

এ জন্যই মিশায়েল লেম্বকে ব্রেড বিয়ার তৈরির নতুন ধারণা নিয়ে এসেছেন। তিনি প্রথমে বাসি পাউরুটির ছোট ছোট টুকরো করেন এবং ব্রিউয়িং প্রক্রিয়ার শুরুতেই তাতে মণ্ড যোগ করেন।

মিশায়েলের বর্ণনায়, “এই ম্যাশ টুনেতে পানি ও মল্ট গ্রিস্ট মেশানো হয়। এরপর এনজাইম সক্রিয় করে তোলা হয়। সেই প্রক্রিয়ার জন্য প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। এরপর মণ্ডের মধ্যে ৫ শতাংশ পাউরুটি দেওয়া হয়। সেই মণ্ড পাম্প করে লটার টানে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে শক্ত অংশ ও তরল আলাদা করে নেওয়া হয়। তারপর শুধু ইস্ট যোগ করা হয়। ইস্ট সাধারণত শর্করাকে অ্যালকোহলে রূপান্তরিত করে। তবে ব্রেড বিয়ারের ক্ষেত্রে সেটা করা হয় না।”

মিশায়েল বলেন, “এই অ্যালকোহল-মুক্ত ব্রেড বিয়ারের জন্য আমরা বিশেষ ধরনের ইস্ট ব্যবহার করি, যা শুধু চিনি গাঁজন করতে পারে। উদ্বৃত্ত চিনি বিয়ারেই থেকে যায়৷ ফলে বেশি অ্যালকোহল সৃষ্টি হয় না।”

Link copied!