হামাসের হামলার পর গত ৩ দিনে ইসরায়েল ও গাজায় নিহতের সংখ্যা এক হাজার ৩০০ জন ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ শতাধিক ইসরায়েলের এবং ৫৬০ জন ফিলিস্তিনের। এছাড়া হামলায় নতুন মোড় নিয়েছে। এবার ইসরায়েলে ঢুকতে শুরু করেছেন লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সদস্যরা। লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর সদস্যদের সঙ্গে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। হিজবুল্লাহর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।
সোমবার (৯ অক্টোবর) টাইমস অব ইসরায়েল ও আল-জাজিরার পৃথক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দক্ষিণ লেবানন থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি জেইনা খোদর বলেন, “পরিস্থিতি ক্রমেই আরও বেশি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে। হামাস ও হিজবুল্লাহর যৌথ আক্রমণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। এমন অবস্থায় ইসরায়েল যদি গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখে, তাহলে অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীও ইসরায়েলকে আরও বিপদে ফেলতে পারে।”
খোদর আরও বলেন, “লেবানন সীমান্ত থেকে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। আমরা জানতে পেরেছি, দক্ষিণ লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলে গোলা ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলও পালটা জবাব দিচ্ছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেন, “লেবানন থেকে কয়েকজন সন্দেহভাজন ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই এলাকায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন রয়েছে।”
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে ইসরায়েলে ঢুকে পড়া কয়েকজন সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আমিরাতভিত্তিক দৈনিক খালিজ টাইমস জানিয়েছে, অন্তত ১০টি দেশের বেশ কয়েকজন নাগরিক হত্যা ও অপহরণের শিকার হয়েছেন।
এই দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, ব্রাজিল, নেপাল, থাইল্যান্ড এবং ইউক্রেন।
যুদ্ধে ইতোমধ্যে নিজেদের ১০ জন নাগরিক নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। থাইল্যান্ডের সরকার জানিয়েছে, ইতোমধ্যে অন্তত ১২ জন থাই নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং অপহরণের শিকার হয়েছেন আরও ১১ জন।
এর আগে শনিবার (৭ অক্টোবর) ভোরে দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এবং হামাসের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সূর্যের আলো পুরোপুরি ফোটার আগেই ৩ হাজারেরও বেশি রকেট ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে।
কাছাকাছি সময়ে হ্যাং গ্লাইডার ও মোটরচালিত গ্লাইডারে চেপে হামাসের বেশ কয়েকজন যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের কার্যালয়ে গিয়ে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের বন্দি ও জিম্মি করার পাশাপাশি ওই কমান্ডের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মূল কমান্ড ও অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। একিসঙ্গে মোটরসাইকেল ও জিপে করে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন আরও কয়েক শ’ হামাস যোদ্ধা। এরপর শুরু হয় যুদ্ধ। যা এখনো চলমান।







































