স্নায়ুযুদ্ধের অবসানকারী সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন একাধারে একজন সংস্কারক ও দূরদর্শী নেতা।
সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ এই প্রেসিডেন্ট তার রাজনৈতিক জীবনে সমসাময়িক বিশ্বের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করেছিলেন। তবে রাশিয়ার বাইরে তিনি যতটা প্রশংসিত হয়েছেন, নিজ দেশে হয়েছেন ততটাই অপ্রিয়।
১৯৩১ সালের ২ মার্চ রাশিয়ার স্টাভরোপোল অঞ্চলের এক কৃষক পরিবারে জন্ম নেন গর্বাচেভ। ১৯৪৬ সালে কিশোর বয়সেই যোগ দেন রাজনীতিতে। ১৯৫২ সালে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন। সেসময়ই যোগ দেন কমিউনিস্ট পার্টিতে।
১৯৭০ সাল পর্যন্ত স্টাভরোপোলের আঞ্চলিক কমিউনিস্ট পার্টিতে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন গর্বাচেভ। ১৯৭১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ লাভ করেন।
১৯৮০ সালে তিনি পার্টির নির্বাহী কমিটি পোলিটব্যুরোর সদস্য হন। ১৯৮৫ সালের ১১ মার্চ নির্বাচিত হন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। এভাবেই তিনি পরিণত হন সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বকনিষ্ঠ ও সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নেতায়।
গর্বাচেভের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কারণে দেশটির জনগণ মুক্ত চিন্তা এবং মত প্রকাশের অভূতপূর্ব স্বাধীনতা লাভ করে। তবে বহির্বিশ্বের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক গড়তে চাইলেও ঠিকভাবে বেসরকারিকরণ হয়নি সোভিয়েত ইউনিয়েনে। এরই মাঝে হঠাৎ করে বিলাসী জীবন যাপন করতে আরম্ভ করেন রুশরা। যার ফলে ধীরে ধীরে মুখ থুবড়ে পড়ে দেশটির অর্থনীতি।
একদিকে ক্ষমতায় থাকাকালীন সোভিয়েত নিয়ন্ত্রনে থাকা দেশ সমূহ, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার, ১৯৯০ সালে বার্লিন ওয়াল ভেঙে দুই জার্মানি একত্রিকরণসহ অসংখ্য সংস্কারমূলক কাজ করেছিলেন তিনি। যার ফলে স্তিমিতি হয়েছিল স্নায়ুযুদ্ধ। বিশ্ব রাজনীতিতে তার অবদানের জন্য ১৯৯০ সালে তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করে সম্মানিত করা হয়।
আর অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নে তার গ্রহণযোগ্যতা নেমে যায় তলানিতে। এমনকি ২০২১ সালেও গর্বাচেভকে নিয়ে এক জরিপে ৭০ শতাংশ রুশ জানান, গর্ভাচেভ তাদের দেশকে উল্টো পথে নিয়ে গেছেন।


































