বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন মালালা

গত মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) এক টুইটে নিজের বিয়ের খবর জানান বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী পাকিস্তানি অ্যাক্টিভিস্ট মালালা ইউসুফজাই। তবে বিয়ের খবরের সঙ্গে ভাইরাল হয় বিখ্যাত ভোগ ম্যাগাজিনকে দেওয়া মালালার সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ।

নারীশিক্ষা বিষয়ক অধিকারকর্মী মালালা সেসময় বলেছিলেন, “আমি এখনও বুঝতে পারি না মানুষ কেন বিয়ে করে। আপনার যদি একজন সঙ্গী সরকার হয় তাহলে কেন বিয়ের জন্য নিবন্ধন করতে হবে, কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করে জীবনসঙ্গী হওয়া যাবে না? তবে আমার মা বলেন, ‘এসব কথা বলার সাহস কী করে হয় তোমার! তোমাকেও বিয়ে করতে হবে, বিয়ে খুবই সুন্দর একটা ব্যাপার’।”

জুন মাসে বিয়ে নিয়ে নিজের আস্বস্তির কথা জানানো মালালা নভেম্বরেই বসেছেন বিয়ের পিঁড়িতে। আর সেকারণেই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

অবশেষে বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন নিজেই। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ভোগ ম্যাগাজিনেই এক প্রবন্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন এই অধিকারকর্মী।

সেরা বন্ধু ও জীবনসঙ্গী খুঁজে পেয়েছেন বলে জানান মালালা। এমনকি তিনি বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন না বলেও দাবি করেন তিনি।

মালালা বলেন, “বিয়ের প্রচলিত প্রথা নিয়ে আমি সর্তক ছিলাম। বিয়ের পর নারীদের অনেক বিষয়ে আপোস করতে হয়। তাই সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলাম।”

বিশ্বের অনেক দেশে বিয়েসংক্রান্ত আইনে সাংস্কৃতিক প্রথা ও নারীবিদ্বেষ প্রভাব দেখা যায় বলে মনে করেন মালালা ইউসুফজাই। যে বিয়ের কারণে নারী তার স্বাধীনতা ও মানবিকাধিকার হারায় তার বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন তিনি।

পাকিস্তানের মেয়েদের কাছে বিয়েকে ‘দাসত্ব’ হিসেবে পরিচয় করানো হয় বলেও মন্তব্য করেছেন মালালা। এসময় বাল্যবিবাহ নিয়েও তিনি নিজের মতামত জানান। মালালা বলেন, পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে পাকিস্তানের অনেক কিশোরীকেই বিয়ের জন্য স্কুল ছাড়তে হয়। পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলকে জীবনের ব্যর্থতা হিসেবে মনে করে পরিবার। আর তাই তাদের বিয়ে করতে জোর করা হয়।

নিজের বিয়ের প্রসঙ্গে মালালা আরও বলেন, স্বামী আসার মালিকের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া হয়েছে তার। পুরুষতান্ত্রিকতা ও দমন–পীড়নের বাইরেও বিয়ের মতো সম্পর্ক টিকে থাকতে পারে এমনটাই বিশ্বাস করতে চান তিনি।