আগ্রাসী পুরুষতন্ত্র কেবল শরীর চিবিয়েই খেল। অধরা থাকলো এ মেয়ের হৃদয়। ইতিহাস কাঁপানো এ লাস্যময়ী বিবেচিত মেরিলিন মনরোর জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২৬ সালের আজকের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যান্জেলসে তার আর্বিভাব। তখন তার নাম ছিল নর্মা জিন মর্টেনসন।
ভীষণ কষ্টের শৈশব নর্মার। জন্মের পর পিতার পরিচয় ছিল না তার। মা ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন। নর্মার শৈশবের প্রায় ১৫ বছর কাটে অনাথপল্লীতে। এরপর ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হলেও সে সম্পর্ক টেকে না। পরে কারখানায় কর্মী হিসেবে শুরু করেন চাকরি। সেখানে এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে সখ্যতা হয়। এরপর পিনআপ মডেল হয়ে তার ক্যারিয়ার যাত্রা। তখন লালসার পুঁজি এর মুনাফার পথ খুঁজে নেয় সোনালি চুলের মনরোকে ঘিরে। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে তার।
১৯৪৬ সাল তখন। মেরিলিন মনরো টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স এবং কলাম্বিয়া পিকচার্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। চলচ্চিত্র যাত্রা তার বেগবান হয় কয়েক বছর পর। ‘অ্যাজ ইয়াং অ্যাজ ইউ ফিল’, ‘মাংকি বিজনেস’, ‘ক্লাশ বাই নাইট’ ও ‘ডোন`ট বদার টু নক’ এর মতো ছবিতে অভিনয় করে হলিউডে নিজের জায়গা পোক্ত করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন ‘আইকন’ এর খোঁজে। শিহরণ জাগানো ছবি ও গানের তারকা মনরো শীর্ষে উঠে আসেন এ বাঁক বদলের ক্ষণে। ১৯৫৭ সালে মুক্তি পায় তার বিখ্যাত ছবি ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’। ‘সাম লাইক ইট হট’ ছবিতে অভিনয় করে নর্মা গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন।
মেরিলিনের জীবনে পুরুষ এসেছে অনেক। তাদের কেউ কেউ হাই প্রোফাইলের। বলা যেতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডি থেকে লেখক আর্থার মিলারের নাম। কিন্তু কেউ তাকে স্থিতি দিতে পারেননি। শান্তি অধরা থেকে গেছে স্বর্ণকেশীর জীবনে।
ক্যারিয়ারের মাঝপথে নানা হতাশায় মনরো বেশি ঔষুধ সেবন ও অতিরিক্ত মদ্যপান শুরু করেন। সন্তানসম্ভবা হলেও জটিলতার কারণে নারী মাতৃত্বের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন। ক্রমেই হয়ে ওঠেন নিঃসঙ্গ থেকে নিঃসঙ্গতর। এরপর আত্মহননের পথে।
১৯৫২ সালের ৪ আগস্ট মাত্র ৩৬ বছরে জীবনের ইতি হয় মেরিলিন মনরোর। এ অস্বাভাবিক চলে যাওয়া নিয়ে তুমুল বিতর্ক এখন পর্যন্ত। বিষয়- হত্যা, না আত্মহত্যা- তা নিয়ে। নারী শুধু শরীরেই বাঁচে না। প্রাণ থাকলে তার মন বলে একটা ব্যাপার থাকে। মনরোর লেখা টুকরো টুকরো কবিতায় সে সত্য উঠে আসে। আর মেরিলিনও তাই অম্লান। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাকে নিয়ে বিমোহিত। অল্প প্রাণ জীবনে এমন দাগ কাটার সার্মথ্য ক`জনের হয়?