• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরীমনি মা হওয়ায় ক্ষুব্ধ তসলিমা নাসরিন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২, ০৭:১৯ পিএম
পরীমনি মা হওয়ায় ক্ষুব্ধ তসলিমা নাসরিন

ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশী নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন বর্তমানে রয়েছেন কলকাতায়। ভারতে থাকলেও বাংলাদেশের নানা ইস্যুতে তাকে বেশ সরব দেখা যায়। বিশেষ করে নারী ঘটিত কোন ঘটনায় তাকে কলম ধরতে দেখা যায়।

এদিকে ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি বর্তমানে মিডিয়াতে প্রায়ই খবরের শিরোনাম হচ্ছেন। কখনো আলোচিত তো কখনো সমালোচিত। ২০২১ সালে পরীমনির ঢাকা বোট ক্লাবের ঘটনার সময়েও সামাজিক মাধ্যমে সর্ব ছিলেন তসলিমা নাসরিন। পরীর পক্ষে বেশ আওয়াজ তুলেছিলেন তিনি।

তবে সেই ভালোবাসা কেটে যেতে সময় লাগেনি। পরীমনির মা হওয়ার ঘটনায় বেজায় নাখোশ তসলিমা। এবার সামাজিক মাধ্যমে পরীমনির নাম উল্লেখ না করলেও ক্ষোভ ঝরেছে তার লেখায়।

সন্তান জন্ম দেয়ার কি প্রয়োজন এমন প্রশ্ন রেখে তসলিমা লিখেছেন, “সন্তান জন্ম দেওয়ার এত দরকার কেন? মেয়েরা, এমনকী প্রতিষ্ঠিত, সমাজের নানা নিয়ম ভেঙে ফেলা সাহসী মেয়েরাও, ৩০ পার হলেই সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এই ব্যাকুলতা কতটা নিজের জন্য, কতটা পুরুষতান্ত্রিক রীতিনীতি মানার জন্য? আমি কিন্তু মনে করি নিজের জন্য নয়, মেয়েরা সন্তান জন্ম দিতে চায় সমাজের ১০টা লোকের জন্য। বাল্যকাল থেকে শুনে আসা, শিখে আসা ‘মাতৃত্বেই নারীজন্মের সার্থকতা’ জাতীয় বাকোয়াজ মস্তিস্কে কিলবিল করে বলেই মনে করে ইচ্ছেটা বুঝি নিজের।”

তসলিমার মতে, “সন্তান জন্ম দেওয়ার ইচ্ছে মানুষের ভেতর আপনাতেই জন্ম নেয় না, জন্ম দেওয়ার প্রক্রিয়াটি প্রাকৃতিকভাবে সম্পন্ন হয়ে যায় না। মানুষ ইচ্ছে করলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, লাগাম টেনে ধরতে পারে গর্ভধারণের যাবতীয় বিষয়াদির। এখানেই পশুর সঙ্গে মানুষের পার্থক্য। মানুষ ভাবতে পারে, সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সন্তান জন্ম দেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে।’
 

সন্তান জন্ম দেয়াতে কাজের সময় নষ্ট হয় বলে মনে করেন তসলিমা। তিনি লিখেছেন, “যারা মূল্যবান কাজ করছে জীবনে, আমার মনে হয় না তাদের উচিত অহেতুক শিশু জন্ম দিয়ে কাজের সময় নষ্ট করা। লালন-পালনেই তো ব্যয় হয়ে যায় জীবনের অনেকটা সময়। নিজেকে যারা ভালোবাসে না, তারাই হয়তো জীবনকে মূল্যহীন করতে দ্বিধা করে না। আর যারা মনে করে বৃদ্ধ বয়সে তাদের দেখভাল করবে সন্তানেরা, তাই সন্তান জন্ম দেওয়া জরুরি, তারা নিতান্তই দুষ্টবুদ্ধির লোক, সন্তানের ঘাড়ে চড়ার বদ উদ্দেশ্য নিয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার পরিকল্পনা করে।”

নারীবাদী এই লেখিকার মতে, “পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮০০ কোটি। এত ভিড়ের পৃথিবীতে আপাতত কোনও নতুন জন্ম কাংক্ষিত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মেয়েরা যদি ভেবে নেয় জন্ম না দিলে তাদের জীবনের কোনও অর্থ নেই, তাহলে তারা যে ভুল তা তাদের বোঝাবে কে! কোনও কোনও মানুষ তাদের জীবনকে শখ করে অর্থহীন করে। তাছাড়া কারও জীবনই অর্থহীন নয়। বরং যে ভ্রুণ আজও জন্মায়নি, সে ভ্রুণ অর্থহীন।”

Link copied!