বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের বাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন আর কৌতুহল দেখা দিয়েছে। ঘটনার সময় অভিনেতার বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সাতজন নিরাপত্তারক্ষী। সিসিটিভি ক্যামেরার নজরে ছিল পুরো বাড়ি। এতে নজরদারির মধ্যেও কীভাবে দুষ্কৃতকারীরা ঘটনা ঘটালো তা নিয়ে রহস্যও তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে সত্যিই বাইরে থেকে কোনো দুষ্কৃতিকারী সাইফ আলী খানের বাড়িতে ঢুকেছে, নাকি ভেতরের কেউ কাণ্ড ঘটিয়েছে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠে মুম্বাই পুলিশ। সংগ্রহ করা হয় অভিনেতার বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। পরে বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী ও পরিচারকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতেই ইতোমধ্যেই তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের অংশ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতির উদ্দেশে বলিউডের নবাবের বান্দ্রার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা। বাড়িতে ঢুকে পড়ার পর পরিচারক তাকে দেখে ফেলেন। পরিচারকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলার সময় সাইফ আলী খান তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে অভিনেতা ঢাকাতদের বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় ডাকাতরা মারমুখি হয়ে উঠে। তাদের হাতে থাকা ধারালো ছুরি নিয়ে হামলার চেষ্টা চালায়। পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে সাইফ আলী খান নিরস্ত্র অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তাকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে ডাকাতরা।
ডাকাতরা চলে গেলে অভিনেতাকে দ্রুত স্থানীয় লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল গঠন করে। তারা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়। চিকিৎসকরা জানান, সাইফের শরীরে ছয় বার ছুরির আঘাত করা হয়েছে। তার হাত ও পিঠের চোট গুরুতর।
সাইফের পিঠে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। লীলাবতী হাসপাতালে রয়েছেন কারিনা কাপুর খানসহ সাইফের গোটা পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাইফ ছাড়া পরিবারের বাকি সদস্যরা পুরোপুরি নিরাপদ ও সুস্থ। সাইফের অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে কোনো রকম গুজব না ছড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে নবাব পরিবার থেকে।
তবে মধ্যরাতে সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে নানা কথা বলা হচ্ছে। মুম্বাইয়ের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে শিব সেনার উদ্ধব শিবির থেকে শুরু করে কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলো প্রশ্ন তুলছে। তাদের প্রশ্ন, এটা গোটা বলিউডকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা। সাইফের মতো সেলিব্রিটিরাই যদি নিরাপদ না হন, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?