যদিও অনেকেই বলে থাকেন ভালোবাসার জন্য বিশেষ কোনো দিন লাগে না। প্রতিদিনই হোক ভালোবাসার দিন। তবুও ভালোবাসার জন্য একটি দিনকে একটু বিশেষভাবেই উদযাপন করা হয় সারাবিশ্বে। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। যার প্রচলন অন্যান্য দেশে অনেক যুগ আগে থেকে পালন করা হয়ে আসছে। তবে বাংলাদেশে ১৯৯৩ সাল থেকে এর প্রচলন শুরু করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও টিভি ব্যক্তিত্ব যায়যায়দিন পত্রিকার সম্পাদক শফিক রেহমান।
এই দিনটিকে অনেকেই অনেকভাবেই পালন করে থাকেন। আজকের এই দিনটিতে প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে কিংবা একা এক কাপ কফি হাতে নিজেই সময় কাটাতে বসে যেতে পারেন ঢালিউডের কিছু উল্লেখযোগ্য ভালোবাসার সিনেমা দেখতে। ভালোবাসা ও সম্পর্কের নানা নাটকীয়তা নিয়ে ঢালিউডে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য ভালোবাসার সিনেমা।
আসুন জেনে নেই ঢালিউডের ভালোবাসার কয়েকটি সফল সিনেমার নাম-
অবুঝ মন: মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় কাজী জহিরের ‘অবুঝ মন’ ছবিটি। এই সিনেমাটিকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র হিসেবে ধরা হয়। ‘শুধু গান গেয়েই পরিচয়’ জনপ্রিয় গানটি এই সিনেমারই গান, যা তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
সুজন সখি: ১৯৭৫ সালে মুক্তি পায় গ্রামের যুবক-যুবতীর সাদামাটা এক প্রেমের কাহিনী নিয়ে খান আতাউর রহমানের নির্মিত ছবি ‘সুজন সখী’। মিষ্টি প্রেমের কিছু রোমান্টিক সংলাপ ও গান দিয়ে এটি হয়ে উঠেছিলো দর্শকের কাছে ভালোবাসার প্রিয় ছবি। সফল জুটি ফারুক-কবরীর এই ছবিটি সেরা রোমান্টিক সিনেমার তালিকাতে ঠাঁই করে নেয়। এই ছবির কাহিনী, সংগীত, প্রযোজনা করেছেন খান আতাউর রহমান। পরবর্তীতে এই ছবিটি রিমেক করা হয়। সেখানে ফারুকের সুজন চরিত্রে অভিনয় করেন সালমান শাহ ও কবরীর সখী চরিত্রে দেখা যায় শাবনূরকে। এই ছবিটিও তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
ঘুড্ডি: ‘চলো না ঘুরে আসি অজানাতে/ যেখানে নদী এসে মিশে গেছে’- এই গান সবারই মনে গেথে আছে। প্রেমে-তারুণ্যের উচ্ছ্বাস মাখা দুর্দান্ত এই গানটি ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ঘুড্ডি’ সিনেমার। ছবিটি বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম এক প্রেমের ছবি হিসেবে সমাদৃত। সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী নির্মিত এই চলচ্চিত্রে জুটি হয়ে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ ও সুবর্ণা মুস্তাফা। দর্শকপ্রিয়তার পাশাপাশি ছবিটি একাধিক শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেছিল।
দেবদাস: অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর প্রেমের উপন্যাস ‘দেবদাস’। নানা ভাষায় বাঙালি প্রেমের অমর আখ্যান ‘দেবদাস’ নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। তবে বাংলাদেশে ১৯৮২ সালে মুক্তি পায় চাষী নজরুল ইসলাম নির্মিত ‘দেবদাস’। প্রেম আর রোমান্টিকতায় ভরপুর এই ছবিতে নাম ভূমিকায় হাজির হয়েছেন মহানায়ক বুলবুল আহমেদ। তার সাথে পার্বতী চরিত্রে আছেন মিষ্টি মেয়ে কবরী, আর চন্দ্রমুখী হয়েছিলেন আনোয়ারা।
কেয়ামত থেকে কেয়ামত: ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় বলিউডের ছবির কপিসত্ত্ব আনা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমাটি। ছবিটি নির্মান করেছিলেন সোহানুর রহমান সোহান। এই ছবি দিয়ে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন সালমান শাহ ও মৌসুমীকে। সেই সঙ্গে এই ছবিতে গান গেয়েই জনপ্রিয়তা পান কণ্ঠশিল্পী আগুন। রোমান্টিক গল্পের কারণেই ছবিটি আজও দর্শকের মনে দোলা দিয়ে যায়।
তোমাকে চাই: মতিন রহমান পরিচালিত ‘তোমাকে চাই’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৩ সালে। এতে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছিলো সালমান-শাবনূর। ছবিতে রয়েছে প্রয়াত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কথা ও সুরে ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ শিরোনামের বিখ্যাত গানটি। এন্ড্রু কিশোর ও কনক চাপার কণ্ঠে গানটির নতুন সংগীতায়োজন করেছিলেন কিংবদন্তি গীতিকবি ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।