• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

পূজার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ, যা বললেন অভিনেত্রী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
পূজার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ, যা বললেন অভিনেত্রী
পূজা ব্যানার্জি। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা ব্যানার্জি। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে বেশ আলোচনায় উঠে আসেন। এ অভিনেত্রী দাবি করেন, তাদের সব টাকাপয়সা খোয়া গেছে। তিন বছর ধরে বন্ধুত্ব ছিল একজনের সঙ্গে। প্রায় পরিবারের মতোই ছিলেন তারা।


সেই বন্ধুই প্রতারণা করেছেন তাদের সঙ্গে। পূজা জানিয়েছেন, গত তিন-চার মাস অত্যন্ত কষ্টকর জীবনযাপন করেছেন তারা। ভবিষ্যতে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তিনি ও তার স্বামী।

পূজার এমন হৃদয়বিদারক বক্তব্য অনুরাগীদের মনেও বেশ দাগ কাটে। হঠাৎ এত বাজে পরিস্থিতিতে কীভাবে পড়লেন অভিনেত্রী ও তার পরিবার, তা নিয়ে শুরু হয় বিশ্লেষণ। তবে তিন দিন পার না হতেই পূজার বিরুদ্ধেই উল্টো অভিযোগ আনলেন প্রযোজক শ্যাম সুন্দর দে ও তার স্ত্রী। 

এবার জানা গেল একেবারে অন্য রকম একটি ঘটনার কথা। শ্যামসুন্দরের স্ত্রী মালবিকা দে জানালেন, পূজা ও তার স্বামী কোনাল মিলে প্রযোজক শ্যামসুন্দরকে অপহরণ করে ২৩ লাখ টাকা আদায় করেছেন।
 
পূজা ও কোনালের বিশেষ বন্ধু শ্যামসুন্দর দে। তিনি টলিউডের অন্যতম নামী প্রযোজকও। ব্যোমকেশ ও দুর্গ রহস্য, সোনার পাহাড়, কাঠমান্ডু’সহ বহু ছবি প্রযোজনা করেছেন তিনি। এই প্রযোজকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু এবার পূজার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ উঠল।

১৪ জুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পূজার বিরুদ্ধে পোস্ট করেন মালবিকা। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, আজ একটি মর্মান্তিক ঘটনার কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। এমন ঘটনার সম্মুখীন যেন কোনো পরিবারকেই না হতে হয়। এরপর মালবিকা জানা ভয়াবহ ঘটনা। 

তিনি জানান, একটি ব্যবসায়িক সফরে গোয়ায় থাকাকালীন শ্যামসুন্দরকে তার গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেন পূজা ব্যানার্জি নিজে। শ্যাম বাবুকে একটি অজানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে ভয় দেখানো হয়, মারধর করা হয় এবং বলা হয় যদি তিনি ৬৪ লাখ না দেন, তবে মাদক মামলায় তাকে ফাঁসানো হবে। এই চরম পরিস্থিতিতে শ্যাম বাবুকে ২৩ লাখ টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। মালবিকার দাবি, এই টাকা পূজার সহকারী মুনমুনের হাতে নগদ এবং পূজা ও কুণালের অ্যাকাউন্টে আরটিজিএস মারফত পাঠানো হয়। সব লেনদেনের যথাযথ ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও প্রমাণ সংরক্ষণও করা হয়েছে।

শ্যামের স্ত্রী মালবিকা লেখেন, আমার স্বামীকে গোয়ায় মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং প্রায় ৬৪ লাখ টাকা চাওয়া হয়। বলা হয়, টাকা না দিলে ওকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে শ্যাম ২৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। পূজা ও কুনালের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে, তার সমস্ত রসিদ এবং লেনদেনের রেকর্ড সংরক্ষণ করেছি আমি।

মালবিকা আরও অভিযোগ করেন, পূজা ও কোনাল শ্যামের মোবাইল কেড়ে নেয়, জোর করে ব্যক্তিগত তথ্য এবং পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। আমার স্বামীকে দিয়ে একাধিক ভিডিও রেকর্ড করা এবং তাকে ওদের কথা অনুযায়ী বক্তব্য বলতে বাধ্য করানো হয়। আপাতত উত্তর গোয়া এসপির নেতৃত্বে গোয়া পুলিশের সহযোগিতায় আমার স্বামী নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন।

ভারতীয় প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, গোয়া পুলিশের নিরবচ্ছিন্ন তৎপরতায় শ্যাম বাবুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নর্থ গোয়ার এসপি’র তত্ত্বাবধানে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিএনএসের একাধিক ধারায় ‘এফআইআর’ দায়ের করেছে। যার মধ্যে রয়েছে ধারা ১২৬(২), ১৩৭(২), ১৪০(২), ৩০৮(২), ১১৫(২), ৩৫১(৩), ৬১(২), ও ৩(৫)। শ্যামবাবুর পরিবার ‘এফআইআর’ কপি, ব্যাংক ট্রান্সফার রসিদ, অভিযোগপত্রের স্বীকৃতি, ভয়ভীতির হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিনশট, ভয়েস মেসেজ এবং পুলিশের ধন্যবাদবার্তা সমস্ত কিছু গণমাধ্যমের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।

যদিও এই গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা বেশি কথা বলতে চাননি পূজা। কলকাতার এক সংবাদমাধ্যমকে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, শিগগিরই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।

Link copied!