দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তেজনা ও ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে ঢাকা কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা এক হলো শান্তির বার্তায়। নিউমার্কেট থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে দুই কলেজের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ঢাকা কলেজের আ ন ম নজিব উদ্দিন খুররম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস। এ সময় দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ফুল ও মিষ্টি বিনিময় করে বন্ধুত্বের প্রতীকী বার্তা দেন।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইস্রাফিল মহিম বলেন, “বিগত কয়েক বছরে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আমরা কেউই এই সম্পর্ককে শত্রুতায় পরিণত হতে দিতে চাই না। এই সম্পর্ক হবে সহযোগিতা, বন্ধুত্ব আর ভ্রাতৃত্বের।”
তিনি আরও যোগ করেন, “জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা একসঙ্গে রাজপথে ছিলাম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছি। এখন সময় এসেছে সেই ঐক্য ধরে রেখে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার।”
আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী তৌফিক আহমেদ বলেন, “আমরা সবাই ভাই। ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, কিন্তু সেটি কখনো শত্রুতায় রূপ নেবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ ও শিক্ষকদের সম্মান রক্ষা করতে হলে আমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই শান্তিচুক্তি কাগজে নয়, মনে রাখতে হবে। পড়াশোনা ও চলাচলে আমরা একে অপরকে ভাইয়ের মতো সহযোগিতা করব।”
ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রেযওয়ানুল হক বলেন, “আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। বিগত দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বড় সংঘর্ষ তৈরি হয়েছিল। এসবের পেছনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপব্যবহারও অনেকাংশে দায়ী। আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করছি— কোনো ধরনের ঝামেলায় যেন আর না জড়ায়।”
অন্যদিকে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস বলেন, “ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজ উভয়ই দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক বিরোধের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। আজকের এই সমঝোতা সেই অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই দুই কলেজের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক বিনিময় বাড়ুক। ভবিষ্যতে কোনো ঘটনা ঘটলে উভয় পক্ষ যৌথভাবে অপরাধী শনাক্ত করবে, কোনোভাবেই পুরো প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হবে না। শিক্ষা ও সম্প্রীতিই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।”




































