দেশ ভাগের সময় ভারত ভাগ হয়নি, পাঞ্জাব ভাগ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল।
তিনি বলেছেন “৬৪’র দাঙ্গার আমার আশে-পাশে সবাই চলে যেতে শুরু করে। দেশ ভাগ আমার হৃদয় স্পর্শ করে। দেশ ভাগের সময় ভারত ভাগ হয়নি পাঞ্জাব ভাগ হয়েছে। পাঞ্জাবের দুঃখ কষ্ট নিয়ে বহু সাহিত্যকের ভাষায় বহু আলোচনা হয়েছে। বাংলা ভাগ নিয়েও অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে যা কিছু আলোচনা হয়েছে সব পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি।”
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের ১০৩ নম্বর রুমে দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্লাহর ‘স্টেট আইডেন্টিটি ডায়াসপোরা ইন তানভীর মোকাম্মেলস ফিল্ম’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তানভীর মোকাম্মেল বলেন,“কোনো এক অদৃশ্য কারণে পূর্ববঙ্গে দেশ ভাগ নিয়ে এক প্রকার নিরবতা কাজ করে। আমি বুঝতে চেষ্টা করেছি এই নিরবতা। একটা কারণ হতে পারে এখানকার মানুষ খুব বেশি পড়াশোনা জানত না। তাই খুব বেশি লেখালেখি হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের স্মৃতিতে বড় হয়ে ঢুকে থাকলেও দেশ ভাগ আমাদের স্মৃতিতে তেমন জায়গা করে নিতে পারেনি। ১৯৭১ সালের বিহারিদের অত্যাচার আমি নিজের চোখেই দেখেছি। আমি বাঙালি পরিচয় কিংবা বাহ্যিক পরিচয় ভুলে গিয়ে মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে বিহারিদের কষ্টের কথা, বাঙালিদের কথা, পাহাড়িদের কথা সামনে আনার চেষ্টা করেছি।”
এ সময় অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, “জিওকালচারাল আইডেন্টিটি থিওরি ব্যক্তিসত্ত্বার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়। বিতর্ক এড়িয়ে প্রত্যেক মানুষের ভূমি ও সাংস্কৃতিক পরিচিতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের প্রতি জোরাল দাবি জানায়। তানভীর মোকাম্মেলের চলচ্চিত্র সীমান্তরেখা ও স্বপ্নভূমিতে উত্থাপিত সমস্যার সমাধান এ তত্ত্বে আলোচনা করা যেতে পারে।”
মোহাম্মদ উল্লাহর লেখা বই সম্পর্কে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ আহসানুজ্জাম বলেন, “এ ধরনের লেখা খুব কম হয় আমাদের দেশে। বাংলাদেশ ফিন্ম আর্কাইভ খুব ভালো একটা কাজ করেছে।”
অনুষ্ঠানে মো. রাশেদুল ইসলাম রাসেলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসেন তালুকদার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাশেদুল ইসলাম রাসেল প্রমুখ।