• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্ত্রী হত্যায় অভিযুক্ত স্বামীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু


লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২, ১১:০০ এএম
স্ত্রী হত্যায় অভিযুক্ত স্বামীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজতে স্বামী হিমাংশু বর্মণের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য পুলিশের দাবি, হিমাংশু আত্মহত্যা করেছেন।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে হিমাংশুর মরদহে তার বাড়িতে পৌঁছেছে। এর আগে শুক্রবার দুপুরে স্ত্রী সাবিত্রী বর্মণকে হত্যার অভিযোগে হিমাংশুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হিমাংশু উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কাদমা গ্রামের বিশ্বেশ্বর বর্মণের ছেলে। 

হিমাংশুর বাবা বিশ্বেশ্বর বর্মণের অভিযোগ, পুলিশ তার ছেলের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেছিল। টাকা দিতে না পারায় তাকে নির্যাতন করে মেরেছে পুলিশ।

বিশ্বেশ্বর বর্মণ জানান, শুক্রবার (৭জানুয়ারি) দুপুরে ছেলেকে থানায় দেখতে গেলে পুলিশ তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে পারলে ছেলে ও নাতনি পিংকীকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। অন্যথায় তাদের জেলে পাঠানো হবে বলে হুমকি দেয় পুলিশ। ওইদিন দুপুর দেড়টার দিকে হিমাংশুর সঙ্গে সর্বশেষ দেখা করেন বাবা বিশ্বেশ্বর। এসময় হিমাংশু তার বাবাকে বলেন, ‘বাবা, পুলিশ আমার কাছে এক লাখ টাকা চেয়েছে। টাকা না দিলে আমাকে ও আমার মেয়েকে জেলে পাঠিয়ে দেবে।”
 
টাকা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, “হিমাংশু থানার কক্ষে থাকা ওয়াই-ফাইয়ের (ইন্টারনেট সংযোগ) তার গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানী নিজ বাড়িতে খুন হন। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে হিমাংশুকে তার স্ত্রীর মরদেহের পাশে দেখতে পান। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমসহ একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে ওই মরদেহসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হিমাংশু ও তার বড় মেয়ে পিংকীকে (১৩) থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

স্থানীয় সন্তোষ কুমার রায় বলেন, “আমরা সুস্থ মানুষকে পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে দিলাম। পরে বিকেলে শুনি তার মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। প্রশাসনের ঘরে তার মৃত্যু হয়েছে শুনে আমরা হতবাক হয়ে গেছি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।”

শুক্রবার রাত ১১টায় হাতীবান্ধা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আমিনের নির্দেশে হিমাংশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাটে পাঠায় পুলিশ। এর আগে রাত ৯টায় লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, থানার কক্ষে আত্মহত্যা করেন হিমাংশু।

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হিরন্ময় বর্মণ জানান, শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে পুলিশ হিমাংশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার গলায় একটি দাগ রয়েছে।

Link copied!