বসন্ত বাতাসে দোল খাচ্ছে আমের মুকুল। আর এই মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে ম ম করছে প্রকৃতি মৌমাছি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরায় আমবাগানগুলো ভরে গেছে মুকুলে মুকুলে।
এ বছর জেলার ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। এ কারণেই আশায় বুক বেঁধে শুরু করেছেন সকাল-বিকেল পরিচর্যা।
সাতক্ষীরা জেলার সদর, তালা, পাটকেলঘাটা, কলারোয়া, আশাশুনি, দেবহাটা, কালীগঞ্জ, শ্যামনগরসহ সাতটি উপজেলায় রয়েছে আমবাগান।
আম চাষে লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই জেলায় আমবাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে ছোট-বড় নতুন নতুন আমবাগান সেখান চাষ করা হচ্ছে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আম।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দেশের অন্য সব জেলা থেকে ২০-২৫ দিন আগেই পাকে সাতক্ষীরার আম। এ জেলার আমের কদর রয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
২০১৬ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম প্রথম ইতালি, ইংল্যান্ড ও জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন, “এ বছর আমের মুকুলে ভরে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা করলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আমরা কৃষকরা আম চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।”
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা রাজার বাগান এলাকার কৃষক লিটন হোসেন বলেন, “এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে। কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছিল, এতে অন্য ফসলের ক্ষতি হলেও আমের জন্য আশীর্বাদ। তবে আগামী কয়েক দিন যদি ঘন কুয়াশা না পড়ে, এভাবে চলতে থাকে তাহলে আমের ভালো ফলন পাব বলে আশা করছি।”
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে কৃষক লাভবান হবেন। বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য কাজ করছে কৃষি বিভাগ। গত বছর করোনা মহামারির কারণে অল্প পরিসরে গোবিন্দভোগ আম বিদেশে পাঠানো হয়েছিল।
নুরুল ইসলাম আরও জানান, বিদেশে রপ্তানি করার জন্য আমের বাগান প্রস্তুত করা হয়েছে। বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য জেলার ৫০০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।