• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ফুল ভাসিয়ে সুখ-সমৃদ্ধি প্রার্থনা করে বৈসাবি উৎসব শুরু


রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম
ফুল ভাসিয়ে সুখ-সমৃদ্ধি প্রার্থনা করে বৈসাবি উৎসব শুরু

পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ৩ দিনব্যাপী উৎসবের শুরু হয়েছে। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ভোর থেকে রাঙ্গামাটিতে শুরু হয়েছে চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই ও ত্রিপুরাদের বৈসাবি উৎসব।

সকাল থেকে পাহাড়ি নারীরা বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ নিয়ে একে একে চলে আসে কাপ্তাই হ্রদে। সৃষ্টিকর্তার আর্শিবাদ প্রার্থনা করে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে পানিতে ফুল ভাসিয়ে উৎসবের সূচনা করেন।

রাঙ্গামাটি শহরের রাজবনবিহার ঘাট ও গর্জনতলী ঘাটে ফুল ভাসিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এতে অংশ নেয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা। কাল মূল বিজু এবং তারপর দিন গোজ্যাপোজ্যার মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। তবে উচ্ছ্বাস থাকবে আরও কয়েকদিন।

জানা যায়, উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে এবং কলাপাতায় করে পবিত্র এই ফুল ভাসিয়ে দেয় পানিতে, তাই একে বলা হয় ফুল বিজু। পানিতে ফুল ভাসিয়ে নিজ পরিবার এবং দেশ তথা সমগ্র জীবের মুক্তির জন্য গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়। পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে পুরনো বছরের দুঃখ-বেদনাই যেনো ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালান পাহাড়ের বাসিন্দারা। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম এই সামাজিক উৎসবে ব্যস্ত প্রতিটি পল্লী। বাংলা বর্ষ বিদায় ও বরণ উপলক্ষে ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই, চাকমারা বিজু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু ও অহমিয়ারা বিহু, এভাবে ভিন্ন ভিন্ন নামে উদযাপন করে। যা ‘বৈসাবি’ নামে সর্বাধিক পরিচিত। পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি, হিংসা, বিভেদ নদীর  জলে ভেসে যাবে। আর নতুন বছর বয়ে আনবে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

ফুল ভাসিয়ে পাপিয়া চাকমা বলেন, “ফুল বিজুর দিনে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন আমাদের ঐতিহ্য। পাশাপাশি আজকে থেকেই বর্ষবরণের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আগামীকাল (১৩ এপ্রিল) মূল বিজু এবং পরশু পহেলা বৈশাখ পালন করব। ফুল ভাসিয়ে আমরা গঙ্গাদেবীর কাছে সুখ ও সমৃদ্ধি প্রার্থনা করি।”

রাঙামাটির স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, “ফুল ভাসানোর মাধ্যমে সম্প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। সামনের বছর যাতে সবার ভালো কাটে, সুস্থভাবে কাটে এই প্রার্থনায় ফুল ভাসানো হয়।”

Link copied!