• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন তিন গম্বুজ মসজিদ


সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ০৮:৩৬ এএম
ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন তিন গম্বুজ মসজিদ
সুনামগঞ্জের জমিদার বাড়ির ঐতিহ্যবাহী মসজিদ

ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন তিন গম্বুজ মসজিদ। হাওরপাড়ের খরস্রোতা পিয়া নদীর তীরে কালের সাক্ষ্য বহন করে আপন মহিমায় দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। মসজিদের সামনে আয়তাকার দিঘি মসজিদটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটির শৈল্পিক কারুকাজ দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে জমিদারবাড়িতে আকর্ষণীয় এই মসজিদটির অবস্থান।

জমিদার না থাকলেও জমিদারের তৈরি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন অনেক দর্শনার্থী। সময়ের ব্যবধানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদে পৃষ্ঠপোষকতা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জৌলুশ হারাচ্ছে ১৭ দশকে তৈরি এ মসজিদটি। এর সঙ্গে হারাচ্ছে মসজিদের পাশে জমিদারবাড়ির চিহ্ন বিশাল দিঘি ও ঐতিহাসিক স্থাপনাশৈলী কারুকার্য নির্দেশনগুলো। তবে সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও তদারকি করলে মসজিদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন শ বছরের বেশি পুরোনো ভাটিপাড়া জমিদারবাড়ির ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারকবাহক হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি স্থাপনা। তার মধ্যে মসজিদটি অন্যতম। জমিদার মোহাম্মদ আলী খুরাইশী পাত্তাহ এসব স্থাপনার প্রতিষ্ঠাতা। একসময় এই বিশাল এলাকাজুড়ে জমিদারত্ব ছিল তার। তিনিই খরস্রোতা পিয়া নদীর পাড়ে নির্মাণ করেন তিন গম্বুজওয়ালা বিশাল মসজিদ। এতে আরও রয়েছে মাঝারি ও ছোট আটটি মিনার।

দিল্লি জামে মসজিদের আদলে ১৭ দশকের শেষের দিকে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মসজিদটিতে কোনো ধরনের পাথর ও রড ব্যবহার করা হয়নি। কেবল ইট আর চুনাপাথরের আস্তরণ দিয়ে তৈরি করা হয়।  

এটিই জেলার একমাত্র জমিদারবাড়ি। যার স্থাপনাগুলো এখনো দৃশ্যমান রয়েছে। জমিদারের বংশধর যারাই আছেন তারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ফলে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে জমিদারবাড়ির অনেক স্থাপনা। 

স্থানীয়রা জানান, তিন গম্বুজের এই মসজিদটি নির্মাণ করতে নদীর পাড়ে তিনটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছিল। যেখানে সনাতন পদ্ধতিতে ইট তৈরি করে মসজিদের গায়ে স্থাপন করা হতো। ভারত থেকে হাতির পিঠে করে মসজিদের পাথরের আস্তরণ এনে ব্যবহার করা হয়েছিল। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ নির্মাণ করতে প্রায় ১৮বছর সময় লেগেছিল। দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, বিশাল দিঘি ঘিরে নানান কল্পকাহিনি রয়েছে এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দা আহমেদ কবির জানান, এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জমিদার ভাটিপাড়া জমিদারবাড়ির ইতিহাস অনেক পুরোনো। এখানে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় মসজিদটি সবার নজর কেড়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটক ও  দর্শনার্থীরা আসেন দেখার জন্য।

ভাটিপাড়া জমিদার বাড়ির বংশধর এম এইচ পাবেল চৌধুরী বলেন, “জমিদারবাড়ির মসজিদটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। অন্য স্থাপনাগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় পাশাপাশি জমিদারবাড়ির ইতিহাস ঐতিহ্যের নিদর্শন সংরক্ষণ করার জন্য একটি মিউজিয়ামের কথা চিন্তা করছি। দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা হলে জমিদারবাড়ি, মসজিদ, দিঘি ঘিরে এখানে পর্যটনের সম্ভবনা রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”

Link copied!