খুলনার বটিয়াঘাটায় নারী ফুটবলাররা আবার খেলায় ফিরেছেন। শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে সাদিয়া নাসরিন, মঙ্গলী বাগচী ও অন্যান্য নারী খেলোয়াড়দের মাঠে খেলতে দেখা যায়। এ সময় তারা বেশ প্রফুল্ল ছিলেন। তাদের সাহস যোগাতে মাঠেই ছিলেন কয়েকজন স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি।
ফুটবলার সাদিয়া নাসরিন বলেন, “পুলিশ প্রশাসন আমাদের পাশে রয়েছে। আমরা শনিবার বিকেল থেকে মাঠে খেলা শুরু করেছি। তারপরও যেহেতু অ্যাসিড মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে, আমাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে।”
ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী বলেন, “শনিবার আবার মাঠে খেলা শুরু করতে পেরে আমরা আনন্দিত। তবে এখনো কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। পুলিশ প্রশাসন শেষ পর্যন্ত আমাদের পাশে থাকলে আমরা সঠিক বিচার পাবো বলে আশা করি।”
বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবীর বলেন, “ঘটনা জানার পরই আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। মূল আসামি নুর আলম, তাকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি এখন কারাগারে আছে। বাকি তিনজন আদালত থেকে জামিন নিয়েছে। তারা এখন এলাকায় নেই। চার জন আসামি একই পরিবারের সদস্য।”
ওসি শওকত কবীর আরও বলেন, “মাঠে নারী ফুটবলাররা খেলার সময় পুলিশ নজরদারি রাখা হচ্ছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে ওই মাঠে সার্বক্ষণিক পুলিশের নিরাপত্তা দেওয়ার। আর যাদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের ও তাদের পরিবারের সঙ্গেও আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”
গত ২৯ জুলাই খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামে চার নারী ফুটবলারের ওপর হামলা চালায় স্থানীয় কয়েকজন। ফুটবলাররা স্থানীয় তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়। একাডেমির এক নারী ফুটবলারের ছবি তুলে বিভিন্ন জনকে দেখানোর প্রতিবাদ করলে তাদের মারধর করা হয়। এতে চার নারী ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী, সাদিয়া নাসরিন, হাজেরা খাতুন ও জুঁই মণ্ডল আহত হন।
ঘটনার পর ফুটলার সাদিয়া নাসরিন বাদী হয়ে হামলার অভিযোগে নুপুর খাতুন, তার বাবা নুর আলম, ভাই সালাউদ্দিন এবং মা রাজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পুলিশ মূল আসামি নুর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলা করায় হামলার পরদিন ফুটবলার সাদিয়াকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেন নুপুর, তার ভাই ও মা। তারা সাদিয়াসহ ফুটবল একাডেমির নারী ফুটবলারদের শরীরে অ্যাসিড ছোড়ার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ ছিলো।